এবার মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বেসরকারিকরণ করা হচ্ছে! স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এমনই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সরকার। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর দিনাজপুর জেলার সংখ্যালঘু দফতরের প্রকল্প অধিকর্তা এই বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।
উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর পাঞ্জিপাড়ায় ইংরেজি মাধ্যমে মাদ্রাসা তৈরি হবে। সেখানে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন শিক্ষক নিয়োগ করবে না। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা এনজিওর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। মোট ১২ জন অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। মাসিক বেতন দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা।
পিপিপি মডেলের মাধ্যমে রাজ্য সরকার শিক্ষাব্যবস্থার বেসরকারিকরণ করতে চলেছে। এমনকী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থাও বেসরকারি সংস্থার হাতে থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী বা এনজিওর হাতে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া তারই প্রথম ধাপ বলে শিক্ষকমহল মনে করছে। জেলার রহৎপুর হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শাহিদুর রহমান জানান, এই বিজ্ঞপ্তি আসলে শিক্ষাব্যবস্থা বেসরকারিকরণের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে এই শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে এবিটিএ'র পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন জানান, এসএসসির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। এসএসসি কর্তৃপক্ষকে ভর্ৎসনা করেছে হাইকোর্ট। এবার মাদ্রাসার নিয়োগ প্রক্রিয়াও বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে সেটাও দুর্নীতিগ্রস্ত হবে। প্রকৃত মেধাবীরা সুযোগ পাবেন না। অভিযোগ, এভাবে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করার রাস্তায় হাঁটতে চলেছে সরকার।
উত্তর দিনাজপুরের এবিটিএ'র জেলা সম্পাদক বিপুল মৈত্র বলেন, আসলে এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেসরকারিকরণের হাতে তুলে দেওয়া অনেক বেশি সহজ হবে। নবান্নের পরিকল্পনা ছাড়া এই ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই পারে না।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন