বহরমপুরে জলাভূমি রক্ষার আন্দোলনে নামা পরিবেশ কর্মীদের বুধবার টেনে তোলা হল পুলিশের গাড়িতে। তাদের মধ্যে ছিলেন প্রবীণ মানুষ থেকে বর্ষীয়ান সমাজকর্মী। বহরমপুর শহরজুড়ে অবৈধ নির্মাণের জেলে বিষ্ণুপুর বিল পরিণত হয়েছে নালায়। সংকটে পড়েছে চালতিয়া- সহ আরো বিল, জলাশয়। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করছে না প্রশাসন। তাই বুধবার এর প্রতিবাদ জানিয়ে বহরমপুরের প্রশাসনিক ভবনের উল্টোদিকে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনশন শুরু হয়।
জলাভূমি রক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে ২৭ অক্টোবর থেকে ২৯ শে অক্টোবর পর্যন্ত অনশনের আহ্বান জানানো হয়। এদিকে প্রশাসনের তরফ থেকে আন্দোলন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এদিন বেলা সাড়ে বারোটা নাগাদ বহরমপুর এর মহকুমা শাসক দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরিবেশ কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। শান্তিপূর্ণ জমায়াতকে অবৈধ ঘোষণা করেন মহকুমা শাসক।
অসুস্থ শরীর নিয়ে কর্মসূচিতে আসা প্রবীণ শিক্ষক নির্মল সরকার-সহ বহু প্রবীণ আন্দোলনকারীকে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। আটক হন বিজ্ঞান মঞ্চের জেলা সম্পাদক সজল বিশ্বাস, সভাপতি তপন সামন্ত, জলাভূমি রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শুক্লা মণ্ডল, শিল্পী সেন। আটক হন আরো অনেকেই।
বহরমপুরে মহকুমা শাসক প্রভাত চট্টোপাধ্যায় দাবি, এই কর্মসূচিতে পুলিশ এবং ভূমি দপ্তর এর অনুমতি ছিল না। তার মধ্যে যেহেতু জলাভূমি ভরাট রুখতে প্রশাসন পদক্ষেপ করছে। সুতরাং এই অনশন কর্মসূচি কোন প্রয়োজন নেই। আগে বল প্রয়োগ করা হয়নি। কোনরকম অশান্তিও হয়নি।আন্দোলনকারীদের প্রথমে বহরমপুর থানায়, পরে মেডিকেল টেস্টের জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁদের থানায় নিয়ে আসা হয়।
জলাভূমি রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শুক্লা মণ্ডল বলেন, রাতে কারফিউর বিধি মেনে আমরা অনশন চালাইনি। দিনে মাইক বাজানোর সরকারি নির্দেশ মানা হয়। তারপরও প্রশাসন এরকম সিদ্ধান্ত নিল। প্রশাসনের ভূমিকার পিছনে মাফিয়াদের হাত রয়েছে বলে অনশনকারীদের একাংশ মনে করেন।
এক আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, 'বুজিয়ে ফেলা হয়েছে বহরমপুর এর প্রায় ৫০টি জলাশয়। যারা অন্যায় করেছে, তাদের প্রশ্রয় দিল পুলিশ। আমরা আবার অনশন কর্মসূচি নেব।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন