বঙ্গ বিজেপি-র অন্দরে কী চলছে, তা হয়ত বুঝে উঠতে পারছেন না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলে ভাঙন তো লেগেই রয়েছে। সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের তৃণমূলে যোগদানের হিড়িকও আছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর একাধিক নেতৃত্ব বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে আসে। বিভিন্ন উপ- নির্বাচনে নিজেদের দ্বিতীয় স্থান হারিয়ে ফেলে গেরুয়া শিবির। সেই জায়গায় উঠে আসে বামেরা। তার উপর রয়েছে দলীয় নীতি নিয়ে নেতা-নেত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশের পালা। এই পরিস্থিতিতে এবার ময়দানে নেমেছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিক্ষুব্ধদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বঙ্গ নেতৃত্বকে সমর্থন করছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে দিল্লি থেকে নেতা-মন্ত্রীদের নিয়ে এসে বঙ্গে প্রচারের ঝড় বইয়ে দিয়েছিল বিজেপি। ২০০ আসনে জয়ী হবে গেরুয়া শিবির, এমনই লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়। কিন্তু বাস্তবে ২০০ থেকে নেমে এসে বিজেপির আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৭। তারপর অবশ্য সেই নেতা-মন্ত্রীদের কাউকে বঙ্গে আসতে দেখা যায়নি।
কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র ঘরবাড়ি হয়ে গিয়েছিল বাংলা। সভামঞ্চে তখন বিজেপির শীর্ষ নেতা মুকুল রায়। কিন্তু বিপুল ভোটে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরতে মুকুল রায়ও ফিরে গিয়েছেন নিজের পুরনো ঘরে। কিন্তু বাংলায় আর দেখা যায়নি ‘দাপুটে দক্ষ সংগঠক’ কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে। তারপর একের পর এক ঘটনায় বিধ্বস্ত বঙ্গ বিজেপি।
এরইমধ্যে বদল হয়েছে বিজেপি রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হয়েছেন। সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য সভাপতির পদে নিয়ে আসা হয়েছে। নতুন জেলা কমিটি গঠন হয়েছে। তা নিয়ে দলের অন্দরে বিক্ষোভের পারদ ক্রমশ তুঙ্গে উঠেছে। বিক্ষুব্ধদের সংখ্যা বেড়েছে। আদি ও নব্যের দ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। কেউ আবার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব উঠেপড়ে লেগেছে।
মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা, সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এঁরা রাজ্য বিজেপির অভিজ্ঞতা বা যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা দলের আদিদের সমর্থনে বক্তব্য রাখছেন। লড়াকু কর্মীদের মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেছেন। বিজেপির পুরনো কর্মীরা হারিয়ে যাচ্ছে বলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন অনুপম। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা বঙ্গ নেতৃত্ব সংগঠনের তাগিদেই মুখ খুলতে বাধ্য হয়েছেন।
আগামী ৪মে বঙ্গ সফরে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একটা অংশ চান যে, বিজেপির রাজ্য কমিটির ফের রিসাফল হোক। অবশ্যই ওই কমিটিতে যেন ভারসাম্য বজায় থাকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন