শোকজ করার পর যেন আরও বেশি চাঁচাছোলা ভাষায় কথা বলতে শুরু করেছেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতারা। রবিবারে শোকজ করা হয়েছে জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে। যদিও শোকজের জবাব দিতে তাঁরা খুব বেশি তাড়াহুড়ো করছেন না বলে তাঁদের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যাচ্ছে। আর এরপরেই বিজেপি তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
কিন্তু তাতেও চুপ করানো যায়নি রীতেশ তিওয়ারিকে। তিনি স্পষ্ট অভিযোগ হেনেছেন, তাঁকে সরিয়ে দিতেই যত ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আর এই লড়াইটা যে আদতে নব্য বনাম আদি, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। তাঁর বক্তব্য, যাঁরা পার্টিকে প্রতিষ্ঠা করেছে, তাদের সরানোর ষড়যন্ত্র চলছে। তবে এই ব্যাপারে বঙ্গ বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি যুক্ত নন বলেই মনে করছেন বিক্ষুব্ধ নেতা।
রবিবার বেশ দৃঢ় ভাবেই রীতেশ জানান, ‘আমি জানি এসবের পিছনে নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কোনও হাত নেই।’ তাহলে রিতেশের নিশানায় কারা? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে। পাশাপাশি তিনি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন নেতাকে 'তৎকাল' বলেও কটাক্ষ করেন।
এদিকে, বিজেপি থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার পর বিক্ষুব্ধ এই বিজেপি নেতার যে দলের প্রতি অভিমান হয়েছে, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। তাঁকে সরানোর জন্য যাঁরা অভিসন্ধি করছেন, তাঁদের নিশানা করে তিনি বলেন, 'এরা বিজেপি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, ২০১৯ সালে পার্টিতে এসেছে। এরা কেউ দলের নেতা নয়। এরা আসলে তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে চায়। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসে তৃণমূলের বি টিম হয়ে কাজ করছে। কিন্তু বিজেপিকে কখনওই তৃণমূলের বি টিম হতে দেওয়া যাবে না।'
তাঁর এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিক্ষুব্ধ নেতারা যেমন শান্তনু ঠাকুর, জয়প্রকাশ মজুমদার, সায়ন্তন বসু বা তিনি নিজে কেউই দল ছাড়ার কথা ভাবছেন না। তাঁরা যে বিজেপিরই অঙ্গ, সেকথাই প্রতিমুহূর্তে বোঝাতে চেয়েছেন।
বিক্ষুব্ধদের নিশানায় যে অমিতাভ চক্রবর্তী ও অমিত মালব্য রয়েছেন, তা প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি রিতেশ। তাঁর বক্তব্য, 'অমিতাভ চক্রবর্তী ও অমিত মালব্য বিজেপিকে ধ্বংস করতে চাইছেন। এর উত্তর বুথ স্তরের বিজেপি কর্মীরা দেবেন। এরা আসলে তৎকাল বিজেপি। দলে কতদিন থাকবেন, তার ঠিক নেই। লড়াই তৃণমূলের বিরুদ্ধে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে হচ্ছে।'
সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি বলেন, 'ক্ষমতা থাকলে অমিতাভ চক্রবর্তী আপনার বিল্ডিং থেকে নেমে ৫ জন কর্মীকে নিয়ে পথসভা করে দেখান। এরা সুসময়ে মধু খেতে এসেছে।' আগামী লোকসভা নির্বাচনে এঁদের অবস্থান কোথায় হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন