বঙ্গ বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি কাটছেই না। ১০৮টি পুরসভা নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার আজই শেষ দিন। কিন্তু সর্বশেষ খবর অনুযায়ী পুরসভার সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি গেরুয়া শিবির। যদিও রাজ্যে নেতৃত্বের দাবি, সোমবার সন্ধ্যাতেই সব পুরসভার ২২৭২টি ওয়ার্ডের প্রার্থীর তালিকা জেলাগুলিকে পাঠানো হয়েছে। যদিও সব জেলা কাছ থেকে প্রার্থী তালিকা মেলেনি।
উত্তরবঙ্গে দিনহাটা পুরসভার এখনও বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। কোচবিহার পুরসভার ২০টি আসনের সব ক’টিতে প্রার্থী দিলেও কেউ মনোনয়নপত্র পেশ করেননি। বিজেপির দার্জিলিঙের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জিএনএলএফের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যাতেও বৈঠক হয়। তুফানগঞ্জ এবং হলদিবাড়িতে সব ওয়ার্ডের প্রার্থী ঘোষিত হয়নি।
দক্ষিণবঙ্গে ডায়মন্ড হারবার পুরসভা, কাটোয়া ও মেমারি পুরসভার একটি করে এবং চাকদহ, বীরনগর ও তাহেরপুরের কয়েকটি ওয়ার্ডেও বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। বিধানসভা ভোটে ব্যাপক প্রচার চালিয়েও মুখ থুবড়ে পড়া, সেই অবস্থা থেকে উপনির্বাচন ও কলকাতা পুরভোটে ঘুরে দাঁড়াতে না পারার, সন্ত্রাসের জন্য বহু বিজেপি কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন বলে দল মনে করছে।
অন্যদিকে, যে সব জায়গায় বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে কর্মী-সমর্থকদের একাংশের বিক্ষোভ ভোগান্তি বাড়াচ্ছে নেতৃত্বকে। খড়্গপুর সদরের বিজেপি বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী হয়েছেন কিন্তু তার প্রস্তাবিত কাউকে প্রার্থী করা হয়নি বলে অভিযোগ। পাল্লা ভারী হয়েছে খড়গপুরে সাংসদ দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠদের।
সোমবার রাতে রাজ্য নেতা তুষার মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে ভাঙচুর হয়। গোলবাজার ভান্ডারিচকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বিজেপি নেত্রী বেবি কোলে। হিরণের বক্তব্য, ‘দলে যাঁরা সারা বছর কাজ করেন, তাঁদের অনেকেই প্রার্থী হতে না পারায় আমি মর্মাহত।' কিন্তু তিনি হিংসাকে সমর্থন করেন না বলে স্পষ্ট জানান।
মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান ও জঙ্গিপুর পুরসভায় আক্রমণের মুখে পড়তে হয় উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষকে। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার ক্ষোভ রয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, জেলার পাঠানো তালিকার নামগুলি বাদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই কৃষ্ণনগরে দলীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়। নদিয়া উত্তরের জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কর্মীদের অনেকে।
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর দাবি, ‘দলের ৫৬ জন কর্মী খুন হয়েছেন। হাজার হাজার কর্মী ঘরছাড়া। আমাদের বিধায়ক, সাংসদরা নিজেদের কেন্দ্রে গেলে বাধা দেওয়া হচ্ছে।' বুধবার দুপুর ৩টেয় সব কেন্দ্রেই বিজেপি প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা করবেন। আর বিক্ষোভ নিয়ে বলেন, 'সব ঠিক হয়ে যাবে।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন