WB: শীতকালীন বৃষ্টির জেরে আলু ও ধানের ব্যাপক ক্ষতি, মিলছে না বিমার টাকা, অভিযোগ কৃষক সভার

সারা ভারত কৃষক সভার হুগলি জেলার সভাপতি ভক্তরাম পান জানান, প্রায় ৪০ শতাংশ আমন ধান পড়ে রয়েছে। সেই ধান থেকে ফসল পাওয়ার কোনও আশা নেই।
ছবি - প্রতীকী
ছবি - প্রতীকী
Published on

অসময়ের বৃষ্টি। আর শীতকালীন বৃষ্টির জেরে মাঠ ভর্তি সবুজ ধান দেখা গেল না এবার। আলুর চারাও বেড়ে যেত। কিন্তু মাঠে পড়ে রয়েছে কেটে নেওয়া ধানের গোড়া। ধান, আলুর একসঙ্গে এত বড় ক্ষতি আগে কোনওদিন কৃষকরা দেখেননি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বীজ। সেই বীজ কিনছেন কৃষকরা। উপায় নেই আগের বারের ঋণ শোধ করতে হবে তো! জেলাজুড়ে দাবি জোরাল উঠেছে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।

ইতিমধ্যে একাধিক কৃষকের আত্মঘাতী হওয়ার খবর শোনা গিয়েছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রশাসনিক নিস্পৃহতা। ক্ষতিপূরণের দাবি করলে শুনতে হচ্ছে চাষই হল না। ফসল ফলল না, তার আবার ক্ষতিপূরণ আবার কীসের। সারা ভারত কৃষক সভার হুগলি জেলার সভাপতি ভক্তরাম পান জানান, প্রায় ৪০ শতাংশ আমন ধান পড়ে রয়েছে। সেই ধান থেকে ফসল পাওয়ার কোনও আশা নেই।

সংগঠনের জেলা সম্পাদক স্নেহাশিস রায় জানান, জেলায় অন্তত দু'লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। এক লক্ষ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আলু চাষে বিঘে প্রতি খরচ হয় ২৮-৩০ টাকা আর ধান চাষের খরচ হয় ধাপে ধাপে। ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে ১৮-২০ হাজার টাকা। যে জমিতে আলু চাষ করা হয়েছিল, সেখানে অন্য চাষের উপায় নেই। বিঘা প্রতি অন্তত ১৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ভালো ফসল হয় অগ্রহায়ণে। পৌষ মাসে ফলন ভালো হয় না। নতুন চাষের সাত হাজার টাকা খরচ বাড়তি হলেও সেই দাম ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম।

অভিযোগ, বিমার টাকা মিলছে না। অথচ সমবায় থেকে ঋণ নিলে বিমার কিস্তি বাবদ প্রতি হাজার টাকায় ৪৮ টাকা ৫০ পয়সা করে কেটে নেওয়া হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে যে টাকাটা দেওয়ার কথা, সেটা আদৌ দেওয়া হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন কৃষকরা।

কে কতটা ঋণ নিয়েছেন? তারকেশ্বর ব্লকেই ৬৫ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন ধান ও আলু চাষিরা। ২০০৩ সালে আলু চাষে বড় ক্ষতি হয়েছিল। সেই কথা মনে করিয়ে কৃষকরা সেই বছরের বিমাবাবদ বরাদ্দ অর্থ পেয়েছিলেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন যে, প্রত্যেক কৃষক তাঁদের বরাদ্দ টাকা পেয়ে যাবেন।

এসবের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সারের কালোবাজারি। শোনা যায়, সামনে ভোট বলে সারের একটা বড় অংশ চলে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। এখানে প্রয়োজনীয় সার মিলছে না। ১৪০০ টাকার সার বিক্রি হচ্ছে ১৯০০ টাকায়। এই সারের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সরকারকে। এমনটাই দাবি কৃষক সভার।

ছবি - প্রতীকী
কৃষক আন্দোলনের সময় পুলিশি হস্তক্ষেপের কারণে কোনও কৃষকের মৃত্যু হয়নি - কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in