মাত্র ৮ ঘণ্টায় কীভাবে ৭ লক্ষ মনোনয়ন জমা নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন? ২০১৮ সালে ৩৪% আসনে কোনও বিরোধী দলকে দাঁড়াতে দেয়নি শাসক তৃণমূল দল, রাজ্য পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের বদান্যতায়। এবার কি সেই রেকর্ড ভাঙতে তৃণমূলকে সাহায্য করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন? প্রশ্ন তুললেন সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ী। মঙ্গলবার রাতে এক ফেসবুক পোষ্টে তিনি সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন রেখেছেন।
এদিন সন্ধ্যে ৭টা নাগাদ নিজের ফেসবুক পেজে এক পোষ্টে সিপিআইএম নেতা লেখেন – “সহজ ৩টে প্রশ্নের উত্তর কি দেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন?”
সিপিআইএম দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক জানান, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের প্রথম তিন দিনে মোট ৭৩,৮৮৭ আসনের মধ্যে মনোনয়ন জমা পড়েছে প্রায় ৪৪ হাজার প্রার্থীর। গড়ে আসন পিছু ১০ জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে চাইলে, বাকি থাকে আরও প্রায় ৭ লক্ষ। হাতে সময় আছে মাত্র দু'দিন অর্থাৎ ৮ ঘন্টা। আবার এই ৮ ঘন্টার কতটা সময় বোমা, গুলি, মারপিট ইত্যাদিতে নষ্ট হবে, সেটা সহজেই অনুমেয়।
এরপরেই তাঁর প্রশ্ন, তাহলে কিভাবে কোন জাদুতে মাত্র ৮ ঘন্টায় ৭ লক্ষ মনোনয়ন জমা নেবে নির্বাচন কমিশন? তাহলে নির্বাচন কমিশন কি চাইছে না, ইচ্ছুক সব প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারুক।
শমীক লাহিড়ী আরও লেখেন, রাজ্যে ৪০৩ টি কেন্দ্রে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার কাজ চলছে। সেখানেই নিরাপত্তা দিতে পারছে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তাহলে ৭৮,৭৯৯ টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা কী ভাবে দেবে নির্বাচন কমিশন?
সিপিআইএম নেতা জানিয়েছেন, রাজ্যে ৫০টিরও বেশি ব্লকে বিরোধী দলগুলোর একজন প্রার্থীও আজ পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারেনি। কারণ তৃণমূল-পুলিশ যৌথ বাহিনীর প্রবল সন্ত্রাস, আক্রমণ, হুমকি, বোমাবাজি, মিথ্যা মামলায় বিরোধী প্রার্থীদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত ৯ জুন থেকে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব শুরু হবার পর থেকে জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছে। একাধিক জায়গায় রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের বাধাদানের অভিযোগ উঠেছে। যদিও বহু জায়গাতেই পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে মনোনয়ন দিয়েছেন বাম প্রার্থীরা।
মঙ্গলবারই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে মামলার রায় দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যেখানে স্পর্শকাতর ৭টি জেলাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিলেও মনোনয়নের দিন বাড়ানোর বিষয়ে আদালত কোনো হস্তক্ষেপ না করে কমিশনের ওপরেই ভরসা রেখেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন