পঞ্চায়েত ভোটের নমিনেশন পর্বে দফায় দফায় অশান্তি ছড়িয়েছে রাজ্যজুড়ে। ঝরেছে রক্ত। খুন হয়েছেন একাধিকজন। কেবল আজকেই খুন হয়েছে তিনজন – চোপড়ায় এক সিপিআইএম কর্মী এবং ভাঙড়ে এক আইএসএফ ও এক তৃণমূল কর্মী। এই সব কিছু নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন ডায়মন্ড হারবারে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রায় ৭৪ হাজার বুথ। সেখানে মাত্র তিনটে অঞ্চলে তিনটে গণ্ডগোল হয়েছে, তাও আবার লোকাল ব্যাপারে। আমাদের দল কোনওভাবেই এতে যুক্ত না। দলের কড়া বার্তা দেওয়া আছে যে যার মতো নমিনেশন দেবে। তাই এবারে আপনারা দেখেছেন লক্ষাধিক নমিনেশন জমা পড়েছে। যা অন্য কোনও রাজ্যে কখনও হয়না।“
বাম আমলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০০৩ সালে সিপিআইএম-এর আমলে পঞ্চায়েত ভোটের সময় সম্ভবত ৩৬ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ওরকমই মারা গিয়েছিলেন। ২০১৩ সালে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মীরা পাণ্ডে ছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এসেছিলেন, ৩৯ জন মারা গিয়েছিলেন।“
এরপর সিপিআইএম এর নাম না নিয়ে তিনি বলেন, “ন্যক্কারজনক একটা রাজনৈতিক দল, যাদের নাম নিতে আমার ঘৃণা হয় লজ্জা হয়, যারা একদিন মানুষ কেটে নদীতে ভাসিয়ে দিত, নন্দীগ্রামের এখানে ওখানে আজও ডেডবডি খুঁজলে পাওয়া যাবে, হাত পা মুণ্ডু কেটে নিত, কাউকে নমিনেশন ফাইল করতে দিত না। আজ তারা গলা উঁচিয়ে বড় বড় কথা বলছে। প্রতিরোধের কথা বলছে। নিজেদের বাক শক্তিকে আগে প্রতিরোধ করুন। নাহলে জেনে রাখবেন একহাতে তালি বাজে না। আমাকে এতবার আক্রমণের পরেও আমি কিন্তু প্রতিহিংসামূলক কোনও ব্যবস্থা নেইনি। কারণ আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। এবারে আপনারা একটু বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। যদি মনে করেন একতরফা হবে সব, তাহলে মানুষ কিন্তু এর জবাব দেবে।“
তাঁর কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের একটাই সমস্যা। অনেক সময় একটা বাড়ি থেকে চার জন দাঁড়িয়ে যান। ফলে মার সাথে ছেলের, কাকার সাথে ভাইপোর লড়াই হয়। ইসলামপুর এবং চোপড়ায় যে ঘটনা ঘটেছে তার সাথে আমাদের দল কোনোভাবেই জড়িত নয়। যারা করেছে তাদের আমরা টিকিট দিইনি। ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে আমরা যোগ্যতা দেখে নমিনেশন দিয়েছি এবার। পুলিশকে বলেছি স্ট্রং অ্যাকশান নিতে।“
ভাঙড় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভাঙড়ে যেটা হয়েছে, নতুন একটা দল জিতেছে ওখানে, তারা করেছে প্রথম পরশুদিন। মুসলিমদের বিপথে চালিত করে, প্ররোচনামূলক স্লোগান দিয়ে এক জায়গায় এনে তাদের দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। আমরা কাল এর প্রতিবাদ করেছি। আজ কী হয়েছে আমি এখনও জানিনা, আমি রাস্তায় রয়েছি।“
তিনি বলেন, “উত্তর প্রদেশ, ত্রিপুরায় লড়তেই দেয় না। ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রার্থী দিতে দেয় না। আর এখানে নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকার সময়ও আমাদের ছেলেপুলেকে অ্যারেস্ট করেছিল বিধানসভা নির্বাচনের সময়।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন