নির্বাচনের নামে হিংসার আগুনে জ্বলছে সারা বাংলায়। চলছে বেলাগাম ছাপ্পা, ব্যালট বাক্স ভাঙচুর। জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যালট পেপার, একাধিক জায়গায় প্রকাশ্যে বন্দুক উঁচিয়ে চলছে সন্ত্রাসের খুল্লামখুল্লা বিচরণ। রাজ্যের ৮০ শতাংশ বুথেই নেই কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু এইসব কিছু নিয়ে বেনজিরভাবে নীরব রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণ শুরুর পাক্কা ৩ ঘণ্টা পরে দফতরে আসেন কমিশনার রাজীব সিনহা। আর তারও দেড় ঘণ্টা অর্থাৎ ভোট শুরুর সাড়ে চার ঘণ্টা পর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের হিসেব চাইলেন তিনি।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও বাঁকুড়া, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় বুথের পর বুথে অনুপস্থিত কেন্দ্রীয় বাহিনী। শনিবার সাড়ে এগারোটার পর বাহিনীর হিসাব চেয়ে চিঠি গেছে রাজ্যের জেলা শাসকদের কাছে। কমিশন তাঁদের দু’ভাগে ওই বুথের তালিকা পাঠাতে বলেছে। স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর বুথ নয়, তার পৃথক তালিকা তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছে।
কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, শুক্রবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৬০০ কোম্পানি বাহিনী এসে পৌঁছেছিল। শনিবার সকালে আরও ৫০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে কমিশন। কিন্তু খাতায়-কলমে এত বাহিনী থাকলেও মাঠে-ময়দানে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে একাধিক জায়গা থেকে। যদিও আদালতের নির্দেশ ছিল, রাজ্যের প্রতিটি বুথে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ৫০:৫০ অনুপাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
বাঁকুড়া জেলার ৩১০০ বুথের মধ্যে মাত্র ৭৫০টি বুথে কেন্দ্রীয় সেনা জওয়ানরা নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছেন। বাঁকুড়ার পাশাপাশি বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ অধিকাংশ জেলার ৮০ শতাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোনও চিহ্ন পর্যন্ত নেই। তার বদলে কোথাও রয়েছে রাজ্য পুলিশের দু-একজন কনস্টেবল, কোথাও সেটাও নেই। চলছে দেদার ছাপ্পা, ভাঙচুর। রাজ্যের একাধিক জেলার বহু বুথে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে রয়েছে। কিন্তু এই সবকিছু নিয়েই কার্যত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন