শুক্রবার রাত থেকেই ছাপ্পা ভোট দিচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তর থেকে দক্ষিণের একাধিক জেলায় এই অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, ব্যালট পেপারে তৃণমূলের প্রতীকে আগে থেকেই ছাপ মেরে ব্যালট বক্সে ভরে রাখা হয়েছে। শনিবার ভোট শুরুর পর এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
কোচবিহার থেকে বর্ধমান সমস্ত জায়গায় বিরোধীদের অভিযোগ, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে ব্যালট বাক্স ভর্তি করতে শুরু করেছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। কোথাও আবার ভোট শুরুর ১-২ ঘণ্টার মধ্যেই ভোট শেষ করে ব্যালট বাক্সে গালা লাগিয়ে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবার ১ ব্লকের নেতড়া অঞ্চলে আগে থেকেই ভোট হয়ে গেছে জানতে পেরে শনিবার সকালে পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীরা। ছাপ্পা করতে গিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের রায়বাড়ে প্রতিরোধের মুখে পড়ে তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় টেবিলের উপর বোমা রেখে ভয় দেখিয়ে দেদার ছাপ্পা মারছিল শাসকদলের কর্মীরা। আইএসএফ কর্মীরা সংঘটিতভাবে তা রুখে দেয়। নন্দীগ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে পথ অবরোধ গ্রামবাসীদের।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোট লুটের প্রতিবাদ জানিয়ে লেখেন, ভোট শেষ! ডায়মন্ড হারবারের একটি বুথে ব্যালট পেপার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের ছত্রছায়ায় থেকে 'ভেঁপো যাত্রায়' যা শেখানো হয়েছিল তাই করছে তৃণমূল।
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের দুর্গাপুর অঞ্চলেও একই ছবি বলে অভিযোগ করেন তিনি। সেখানেও রাত থেকে ব্যালট পেপারে তৃণমূলের প্রতীকে ছাপ দেওয়া শুরু হয়েছে। ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনে এটাই তৃণমূলের 'স্টাইল' বলে আক্রমণ করেছেন তিনি।
আবার কোচবিহারের সিতাইয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী সকাল থেকেই ব্যাপক ছাপ্পা দিতে শুরু করে। প্রতিবাদে তাঁরা ব্যালট বাক্সে আগুন লাগিয়ে দেন। পুড়ে ছাই হয়ে যায় ব্যালট পেপার। পরে গ্রামবাসীরাই লাঠি হাতে দুষ্কৃতীদের তাড়া করেন। দিনহাটাতেও ব্যালট বক্সে আগুন লাগিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। ময়ুরেশ্বরেও ভোট লুঠের প্রতিবাদে ব্যালট বাক্স পুড়িয়ে দেন গ্রামবাসীরা।
আবার উত্তর ২৪ পরগনার জ্যাংড়াতেও একই অভিযোগ ওঠে। সিপিআইএম-র অভিযোগ, শনিবার সকাল থেকেই বুথ দখল করে অবাধে ছাপ্পা মারতে থাকে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। প্রতিবাদে ব্যালট বক্স জলে ফেলে দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ গিয়ে সেই বক্স উদ্ধার করে। বিলকান্দা, রাজারহাট নিউটাউনের চেহারাটাও একই। অভিযোগ, সকাল ৫.৩০টা থেকে ৪০০-৫০০ বহিরাগত ছেলে নিয়ে বুথ দখল শুরু করে তৃণমূল। পুলিশকে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন