পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নকল ব্যালট পেপার ছাপার অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। এবার প্রশাসনের ভেতর থেকেই সেই অভিযোগ উঠছে। যার ফলে বদলি হতে হয়েছে পুরুলিয়া জেলার দুই আধিকারিককে।
এক সপ্তাহ পর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে পঞ্চায়েতের কাজের সাথে যুক্ত থাকা পুরুলিয়া জেলার দুই আধিকারিককে বদলি করেছে নবান্ন। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, পুরুলিয়ার অতিরিক্ত জেলা শাসক প্রণব কুমার ঘোষ নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপার দায়িত্বে ছিলেন। আর ডিস্ট্রিক্ট প্ল্যানিং অফিসার (DPLO) দীপ ভাদুড়ী ছিলেন ইলেকশন ইনচার্জ। এঁদের বদলির অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে নকল ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রসঙ্গ।
গণশক্তি পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুই আধিকারিককে জেলা পরিষদের আসনের জন্য প্রয়োজনের দ্বিগুণ ব্যালট পেপার ছাপানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তাঁরা সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। তাঁদের দাবি ছিল, লিখিত আকারে নির্দেশ দিতে হবে। নয়তো তাঁরা অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপাতে পারবেন না। শীর্ষ আধিকারিকের নির্দেশ না মানার জন্যই বদলি হয়েছে তাঁদের বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রণব কুমার ঘোষকে নবান্নের প্রশাসনিক কর্মীবর্গ দপ্তরের ওএসডি পদে নিয়োগ করা হয়েছে। ডিপিএলও দীপ ভাদুড়ীকেও ওই একই পদে নিয়ে আসা হয়েছে। জেলা শাসকের তরফ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর তাঁদের বদলিতে সম্মতি দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, এই দুই আধিকারিক নির্বাচনের কোনো কাজে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ম বলছে কোনো বুথে যদি ৫৩২ জন ভোটার থাকে তাহলে ৫৪০টি ব্যালট পেপার ছাপাতে হবে। সাথে অতিরিক্ত ১০টি ব্যালট পেপার ছাপিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু প্রশাসনিক স্তরে ৭০ থেকে ১০০টি অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানোর অভিযোগ উঠছে।
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী অভিযোগ করেছিলেন, "ডবল ব্যালট পেপার ছাপা হচ্ছে। সেই ব্যালট পেপার নির্বাচনের দিন বুথ থেকে স্ট্রং রুমে যাওয়ার পথে পরিবর্তিত হবে। যে অফিসাররা ব্যালট পেপার ছাপান তাঁদের মেশিনের চাবি পুলিশ চাইছে। বাংলায় এক ভয়ঙ্কর কারচুপির খেলা চলছে।"
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও এই আশঙ্কা করে বলেন, "যে রাজ্যে জাল ওএমআর শিটে চাকরি হয়, সেই রাজ্যে জাল ব্যালটের আশঙ্কা তো আছেই। গতবার ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলা হয়েছিল। এবার যাতে বুথ থেকে ব্যালট বাক্স ঠিক মতো স্ট্রংরুমে নিয়ে যাওয়া হয়, স্ট্রংরুমে যাতে সিসিটিভি সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় এগুলি নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব, মানুষের কিন্তু নজরদারি থাকবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন