ভোটগণনার দিন সকাল থেকে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে বিরোধী দলের প্রার্থী, তাঁদের কাউন্টিং এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেবার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক জায়গা থেকে বাম প্রার্থী, কাউন্টিং এজেন্টদের আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। সব ক্ষেত্রেই শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বহু জায়গাতেই বিরোধী এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। একাধিক গণনাকেন্দ্র থেকে বিরোধী এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
বীরভূমের নানুরে এদিন সকালেই সিপিআইএম কর্মীদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁদের মারধোর করা হয়।
হুগলীর জাঙ্গিপাড়ায় ডিএন হাইস্কুলের গণনাকেন্দ্র থেকে সিপিআইএম এবং আইএসএফ এজেন্টদের মারধোর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ১ নম্বর ব্লকের গণনাকেন্দ্রে সিপিআইএম এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। একই অভিযোগ জানিয়েছে বিজেপিও। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে সিপিআইএম-এর একজন কাউন্টিং এজেন্ট আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পূর্ব বর্ধমানের ১ নম্বর ব্লকের বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের গণনাকেন্দ্র থেকে সিপিআইএম এজেন্টদের মেরে বের করে দেওয়া হয়েছে। সিপিআইএম-এর পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।
পূর্ব বর্ধমানেই গলসিতে সিপিআইএম এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় এক সিপিআইএম কর্মীর পা ভেঙেছে। গলসি ১ নম্বর ব্লকে জেলা পরিষদের এক মহিলা প্রার্থীকে পুলিশের সামনেই গণনাকেন্দ্র থেকে মেরে বের করে দেওয়া হয়। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধেই।
পূর্ব বর্ধমান জেলার সদর ১ নং ব্লকে (দেওয়ানদিঘী থানা)র অন্তর্গত গণনা কেন্দ্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমস্ত এজেন্টকে মারধর ও শারীরিক নিগ্রহ করে বের করে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত তৃণমূল।
মুর্শিদাবাদে এক তৃণমূল প্রার্থী এবং তাঁর স্বামীকে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে সিপিআইএম-এর বিরুদ্ধে। উত্তেজনা ছড়িয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরেও। সেখানে বিরোধী প্রার্থী ও এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় আটকে দেবার অভিযোগ উঠেছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মণ্ডহারবারের ফকিরচাঁদ কলেজের গণনাকেন্দ্রে বোমাবাজির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সিপিআইএম নেতা প্রতীক উর রহমান সহ পাঁচ সিপিআইএম, কংগ্রেস ও আইএসএফ কর্মী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর ১ এবং ২ সহ বিদ্যানগর কলেজের কাউন্টিং সেন্টার থেকে কংগ্রেসের এজেন্টদের রক্তাক্ত করে বের করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক দাঁড়িয়ে হিংসার নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের।
মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগণনা। ২২ টি জেলার মোট ৩৩৯ টি কেন্দ্রে এই গণনা চলছে। প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত, পরে পঞ্চায়েত সমিতি এবং সব শেষে জেলা পরিষদের আসনে ভোট গণনার কথা।
রাজ্যে মোট পঞ্চায়েত আসন ৬৩,২২৯। পঞ্চায়েত সমিতির আসন ৯,৭৩০ এবং জেলা পরিষদ আসন ৯২৮। যার মধ্যে জেলা পরিষদের ১৬, গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭,৯৪৪ এবং পঞ্চায়েত সমিতির ৯৮১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন