পঞ্চায়েত নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তৃণমূলের অন্দরে অস্বস্তি তত বেড়ে চলেছে। দলের দুই বিধায়ক হুমায়ুন কবীর ও মনোরঞ্জন ব্যাপারীর দলবিরোধী কাজে কার্যত বেকায়দায় শাসকদল। দলের দুটি পদ ছেড়েছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।
নিজের পছন্দের প্রার্থী দিতে না পারায় দলের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। নিজের ফেসবুক ওয়ালে দু'টি দলীয় পদ ছাড়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। তিনি লেখেন, 'প্রিয় বলাগড়বাসী জনগণ ও জেলা সহ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বকে এই পোষ্টের মাধ্যমে জানাই, আমাকে দল দুটি পদ প্রদান করেছিল। এক, ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিটির সদস্য, হুগলী জেলা ( জোনাল ৬), দুই, সাধারণ সম্পাদক পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি, উক্ত দুটি দলীয় পদ থেকে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করলাম।'
তৃণমূল বিধায়ক আরও লেখেন, 'বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু যেহেতু আগে আমি একটি চাকরি করতাম, নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্য সেটি ছাড়তে হয়েছিল! দু বছরের অধিক সময় হয়ে গেল, পঞ্চাশ বার ছোটাছুটি করেও যার পেনশন ও গ্রাচুইটির কিছু পাইনি, তাই এই মুহূর্তে বিধায়ক পদ ছাড়তে পারছি না। তা হলে খাবো কী? যেদিন পেনশন পেতে আরম্ভ করবো এই পদ থেকেও সরে দাঁড়াব। এতদিনে বুঝতে পেরেছি এই রাজনীতি আমার মতো মানুষের জন্য নয়। সবাইকে ধন্যবাদ ও নমস্কার।'
মনোরঞ্জন ব্যাপারী এক জনপ্রিয় বাংলা সংবাদমাধ্যমে জানান, তাঁকে যারা জিতিয়েছে তাদেরকে দল টিকিট দেয়নি। অথচ তৃণমূলে থেকে আমাকে যারা হারাতে চেয়েছিল তাদেরকে দল টিকিট দিয়েছে। এর সিআইডি তদন্ত হওয়া উচিত। কত টাকার বিনিময়ে টিকিট দেওয়া হয়েছে তা সকলে জানুক।
অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই দলের অস্বস্তি বাড়াচ্ছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। প্রার্থী ঘোষণার পর দলীয় নেতাদের ওপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনিও। তিনি প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, যাদের টিকিট দেওয়া হয়েছে সকলেই দুর্নীতিগ্রস্ত ও তোলাবাজ। সরাসরি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জিকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
হুমায়ুনের মূল অভিযোগ মুর্শিদাবাদ জেলা সাংগঠনিক সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, 'আমিও আব্দুল করিম চৌধুরীর মতো মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলছি প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে দিন। আর ৭২ ঘন্টার মধ্যে শাওনি সিংহ রায়কে অপসারণ করতে হবে।' ৫০ হাজার লোক নিয়ে দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করারও হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূল বিধায়ক।
তবে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সুর নরম করেছেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, আমি যে দাবি করেছিলাম তা প্রত্যাহার করছি। দলের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলাম তার জন্য ক্ষমা চাইছি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন