পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীদের ঝাড়খণ্ড থেকে তুলে আনতে তৎপর হয়েছে সাগরদিঘি থানার পুলিশ! শুধু পুলিশি নয়, পুলিশের সাথে রয়েছে সিভিক ভলেন্টিয়ার ও তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাও। এমনটাই অভিযোগ করেছে বাম-কংগ্রেস।
রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে চলছে বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া। এরই মধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে 'অপহরণে'র অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা। বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, সাগরদিঘিতে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের জন্য তাদের জয়ী প্রার্থীদের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করছিল তৃণমূল। সেই কারণেই সুদূর ঝাড়খণ্ডে আশ্রয় নিয়েছিলেন জয়ী প্রার্থীরা। সেখানে গিয়েও রেহাই নেই। অভিযোগ, সাগরদিঘি থানার পুলিশ ও স্থানীয় কিছু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ে যায় ওই প্রার্থীদের তুলে আনতে।
বাম-কংগ্রেসের তরফ থেকে জানা গেছে, গত ২৫ দিন ধরে পাকুড়েই ১৪ জন প্রার্থী একসাথে রয়েছেন। সকল প্রার্থী সাগরদিঘির কাবিলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের। এই পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ২৫। শাসক দল জেতে ১১টি আসনে এবং বাম-কংগ্রেস জয়ী হয় মোট ১৪টি আসনে। ফলে দুজন জয়ী প্রার্থীকে নিজেদের দলে টানতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। বোর্ড গঠনের উদ্দেশ্যে এখন পুলিশকে সাথে নিয়েই জয়ী প্রার্থীদের তুলে আনার চেষ্টা করেছে তৃণমূল বলে অভিযোগ।
বাম কংগ্রেস থেকে জয়ী হওয়া প্রার্থীদের মধ্যে পুরুষ মহিলা উভয়েই রয়েছেন। তাদের দাবি, মঙ্গলবার দুপুরে পাকুড়ের আশ্রয় শিবিরের বাইরে তিনটি গাড়ি এসে থামে। দুটিতে পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং একটি গাড়িতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ছিল। পুলিশ জয়ী প্রার্থীদের গাড়িতে ওঠার জন্য প্রস্তাব দেয়। বিরোধিতা করায় পুলিশ ও প্রার্থীদের মধ্যে রীতিমতো বচসা বাদে।
পুলিশের উদ্দেশ্যে বাম কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থীরা জানিয়ে দেন, পুলিশের সাথে কিছুতেই সাগরদিঘি ফিরে যাবেন না তাঁরা। নিজেরাই এসেছেন এবং নিজেদের ক্ষমতাতেই বোর্ড গঠনের লক্ষ্য নিয়ে সাগরদিঘি যাবেন।
বচসা দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পাকুড় থানায় অভিযোগ জানান। ঘটনাস্থলে পাকুড় থানার পুলিশ এসে সাগরদিঘি থানার পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে চলে যান। সেখানেই বসিয়ে রাখা হয় রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের।
সিপিআইএম নেতা ইসমাইল শেখও জয়ী প্রার্থীদের সাথে একই আশ্রয় শিবিরে রয়েছেন। তিনি বলেন, 'ঝাড়খণ্ডের মানুষও দেখল পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রের কী অবস্থা হয়েছে। নির্বাচনের দিন থেকেই সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। গণনাতেও সেই একই ছবি ধরা পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে আমরা নিজেদের গ্রামে ফিরতে পারছি না। তবে পঞ্চায়েতের বোর্ড আমরাই গঠন করব। তৃণমূল হাজার চেষ্টা করলেও পারবেনা'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন