এসএসসি, টেট, সিএসসি, মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর এবার চাকরি দেওয়ার নামে বেসরকারি সংস্থার লেটারহেড জাল করার অভিযোগ উঠল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। এই ভুয়ো 'অফার লেটার' দেওয়া নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে ফানফার্স্ট গ্লোবাল স্কিলার্স সংস্থা। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।
বৃহস্পতিবার, গণশক্তি পত্রিকার এক সাংবাদিককে ফানফার্স্ট-র শীর্ষকর্তা সিদ্ধার্থ কক্কর জানান, যেভাবে আমাদের সংস্থার লেটারহেড ব্যবহার করে ভুয়ো 'অফার লেটার' তৈরী করা হয়েছে তা অত্যন্ত অন্যায়। আমরা যত দ্রুত সম্ভব আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছি। ইতিমধ্যেই আইনি শাখার সাথে আমাদের কথাবার্তা শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই বেসরকারি সংস্থার কর্তাদের কাছে ক্রমাগত ফোন যায় চাকরিপ্রার্থীদের। বুধবার সকাল থেকে ফোনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। তাঁদের একটাই কথা ছিল, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আমাদের অফার লেটার দিয়েছেন। কবে যোগ দিতে হবে?'
অহরহ ফোনকল আসার পর বুধবার ফানফার্স্ট কোম্পানির মুম্বাই অফিসের 'স্ট্র্যাটেজি হেড' সিদ্ধার্থ কক্কর রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিবকে এই বিষয়ে চিঠি পাঠান। একই চিঠি দেওয়া হয়েছে কারিগরি শিক্ষা দপ্তরের যুগ্ম ডিরেক্টরেটকেও।
চিঠিতে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, ফানফার্স্ট কোম্পানির তরফে কোনও নিয়োগপত্র পশ্চিমবঙ্গে পাঠানো হয়নি। এমনকি রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও আমাদের কাছে নিয়োগের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কোনও চিঠি আসেনি। তাহলে কী করে কোম্পানির নামে এই ভুয়ো অফার লেটারে ব্যবহার করা হল? সরকার স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিক।
পাশাপাশি, এ রাজ্যের যেসব ছেলেমেয়ে ফানফার্স্ট কোম্পানির কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দিয়েছিল, চিঠির সাথে সেগুলিও পাঠানো হয়েছে। তবে রাজ্য সরকারের থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 'উৎকর্ষ বাংলা' প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে তরুণদের প্রশিক্ষণ ও চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুযায়ী গত ১২ সেপ্টেম্বর নেতাজী ইণ্ডোর স্টেডিয়ামে ১০ হাজার অফার লেটার দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও গত মঙ্গলবার হুগলির নোডাল অফিসে আরও প্রায় ৩ হাজারের বেশি চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগপত্র এসে পৌঁছায়। সারারাত ধরে সেগুলি বিলি করা হয়। কিন্তু পরে জানা গেছে সেগুলি সবকটিই ভুয়ো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন