এবার দলের সমালোচনা করার তালিকায় নাম লেখালেন খোদ রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি এই পদে আসার পর যেখানে তাঁকে নিয়ে বারবার দলীয় নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে তাঁর মন্তব্য রাজনৈতিক মহল তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা প্রচারে এসে সাফ জানিয়েছিলেন, বঙ্গে বিজেপি ২০০ আসনে ক্ষমতায় আসবে। তা তো হয়নি, উল্টে জয়ের আসন সংখ্যা নেমে আসে মাত্র ৭৭-এ।
সুকান্তর কথায়, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার যোগ্য হয়ে ওঠেনি বিজেপি। শুধু তা-ই নয়, ভোটের লড়াইয়ের কৌশল তৃণমূলের কাছ থেকে শেখার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি। রবিবার মেদিনীপুরে দলের সাংগঠনিক বৈঠকে সুকান্ত বলেন, ‘এদিকে কর্মীদের বলছি, কিছু বলার থাকলে উপরে বলবেন। অন্যদিকে আমরা নিজেরাই চায়ের দোকানে অন্যের সম্পর্কে বলছি। মানুষ অত বোকা নয়। মানুষ সব দেখে। আমরা ক্ষমতায় আসার যোগ্য হইনি।’
প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পাশে বসিয়েই সুকান্ত বললেন, ‘আমরা দুশোর স্বপ্ন নিয়ে এগোলাম। ‘সরকার গড়ছি, সরকার গড়ছি’, হাইপে তৈরি করলাম। লোককে স্বপ্ন দেখানোর কথা ছিল। তা না করে নিজেরাই স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্নের মধ্যে নাচতে শুরু করলাম। তার ধপাস করে নীচে পড়লাম।’ নিজেদের মধ্যে দলাদলিই বিজেপির রাজ্যজয়ের স্বপ্ন নষ্ট করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে সুকান্ত মজুমদারের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। নাম না করে দলের বর্তমান রাজ্য সভাপতির বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, "আমি নিজে রাস্তায় বেরিয়েছিলাম। মানুষ পিছনে দাঁড়িয়েছিল। মানুষ আশীর্বাদ করেছিল। এখন মানুষের সেই বিশ্বাস নেই। রাজ্যের লোক চায় আমরা মাঠে নেমে আন্দোলন করি। সেই রোল আমরা প্লে না করতে পারলে মানুষ আমাদের প্রধান বিরোধী হিসেবে রাখবে কেন?"
শুধু তাই নয়, তিনি এও বলেন - "২০১৯ সাল পর্যন্ত যাঁরা পার্টিকে দাঁড় করিয়েছেন, তাঁরা মনে কষ্ট নিয়ে ঘরে বসে আছেন। তাঁরা ঘন্টার পর ঘন্টা পার্টির জন্য সময় দিতেন। তাঁদের হাতে এখন কোনো কাজ নেই। যোগ্য লোকদের বাদ দিলে কিভাবে হবে?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন