সরকারের থেকে শুধু ত্রাণ চাই না, চাই নদীবাঁধ। স্লোগান সুন্দরবনের যশ বিধ্বস্ত মানুষদের। শুধু স্লোগানেই আটকে নেই তাঁরা। আন্দোলন করছেন নিজেদের মতো করেই। সত্তর দশকে চিপকো আন্দোলন ছিল গাছ কাটার বিরুদ্ধে লড়াই। একই চিত্র দেখা গেল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমার হেরম্বগোপালপুরে।
সেখানকার মানুষের লড়াই নদী বাঁধ বাঁচানো নিয়ে। পরিবেশ বাঁচাতে গাছকে আলিঙ্গন করে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন উত্তর ভারতের মহিলারা। আর এখানে নদীবাঁধ বাঁচাতে এগিয়ে এলেন শিক্ষক, চিকিৎসক, পুলিশ, বাস্তুকার, ব্যাঙ্ককর্মী থেকে শুরু করে গৃহবধূ। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বাঁধ বানিয়ে সুন্দরবন রক্ষার এই বিক্ষোভে শামিল সমাজের সব স্তরের মানুষ।
ঘূর্ণিঝড় যশের জেরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেদিনীপুর জেলা এবং সুন্দরবন। অসংখ্য নদী বাঁধ ভেঙে দিয়েছে। এদিন পাথরপ্রতিমার হেরম্বগোপালপুর ও কুয়েমুড়িরে ভাঙা নদীবাঁধে মানব বন্ধন করে সবাই দাঁড়ান। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের মুখে শোনা যায় বিক্ষোভ স্লোগান, 'আমরা হেঁতাল, আমরা গরাণ, সুন্দরী ম্যানগ্রোভ, কান্না মুছে লড়তে জানি যতই থাকুক ক্ষোভ।' বিক্ষোভ প্রদর্শনের আগে, স্থানীয় এলাকাবাসীর হাতে ত্রাণ তুলে দেন তাঁরা। এরপরই হাতে হাত ধরে বাঁধরক্ষার 'মন্ত্র' পাঠ করেন। কিন্তু তাঁরা জানান, সরকারের থেকে শুধু ত্রাণ নয়, চাই নদীবাঁধ।
স্থানীয় এক বাসিন্দা কথায়, স্বাধীনতার পর থেকে আজও সুন্দরবন অবহেলিত। স্বায়ত্তশাসন নিয়ে, মাছ, মধু আর কাঁকড়া ধরতে যাওয়া মানুষগুলির জীবন জীবিকা নিশ্চিত করতে বাঁধ রক্ষা করুক সরকার। বাঁধ কংক্রিটের হবে না ম্যানগ্রোভের, তা স্থির করুক বিশেষজ্ঞ কমিটি। অরণ্য ধ্বংস করে যাঁরা ফিশারি তৈরি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও সরকারকে কড়া পদক্ষেপ করুক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন