আগামী ৩১ ডিসেম্বর রেশন কার্ডের সাথে আধার সংযোগ করার শেষ দিন। অর্থাৎ আর মাত্র ১ মাস। কিন্তু রাজ্যে এখনও ৩ কোটির বেশি গ্রাহকের রেশন কার্ডের সাথে আধার সংযোগ হয়নি। এক মাসের মধ্যে এই কাজ না করলে রেশন তুলতে পারবে না গ্রাহকরা।
গোটা দেশে 'এক দেশ এক রেশন' প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যার জন্য বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন (আঙুলের ছাপ দিয়ে যাচাই প্রক্রিয়া) বাধ্যতামূলক। খাদ্য দপ্তর সূত্রের খবর, রাজ্যে এখনও ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ৬৪ হাজার গ্রাহকের রেশন কার্ডের সাথে আধার সংযোগ এবং বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশনের কাজ বাকি পড়ে আছে, শতাংশের হিসেবে যা প্রায় ৩১ শতাংশ। প্রসঙ্গত, গোটা রাজ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্যের খাদ্য সুরক্ষা যোজনা মিলিয়ে মোট ১০ কোটি ৩০ লক্ষের কাছাকাছি রেশন কার্ড রয়েছে।
প্রথমে এই 'এক দেশ এক রেশন' প্রকল্পের বিরোধিতা করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত হবার পর অনেক দেরিতে তা চালু করে। এখনও পর্যন্ত তিনবার সময়সীমা বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে ৩১ আগস্ট এই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ে দেখা যায় ৪০ শতাংশ কাজ বাকি। এরপর সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর করা হয়। এখনও বাকি রয়েছে ৩১ শতাংশ। অর্থাৎ শেষ তিনমাসে কাজ হয়েছে মাত্র ৯ শতাংশ। বাধ্য হয়ে ফের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়। গত ২৬ নভেম্বর এই নির্দেশিকা জারি করা হয়, যেখানে স্পষ্ট বলে দেওয়া হয়েছে, "এরপর আর একদিনও সময়সীমা বাড়ানো হবে না।"
রাজ্যের সমস্ত জেলার হিসেবে সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি মালদহে, এখানে ৪৩ শতাংশ গ্রাহকের আধার কার্ডের সাথে রেশন কার্ডের সংযোগ বাকি রয়েছে। উত্তর দিনাজপুরে ৩৮ এবং মুর্শিদাবাদে ৩৩ শতাংশ বাকি রয়েছে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে বাকি রয়েছে যথাক্রমে ৩১%, ৩০%, ৩৩% এবং ২৪%। উত্তরবঙ্গে যাদের বাকি রয়েছে তাঁদের অধিকাংশই চা শ্রমিক।
জঙ্গলমহলের জেলাগুলোর মধ্যে ঝাড়গ্রামে রেশন কার্ডের সাথে আধার সংযোগের কাজ বাকি রয়েছে ২৯ শতাংশ। পুরুলিয়াতে বাকি রয়েছে ৩৩ শতাংশ।
শুধু গ্রামাঞ্চলেই নয়, খাস কলকাতাতেও সক্রিয় রেশন কার্ডের একাধিকের সাথে আধার সংযোগ নেই। উত্তর কলকাতায় ৪০ শতাংশ গ্রাহকের এই কাজ বকেয়া রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতাতেও বাকি বহু। হাওড়া শহর এলাকায় ৩৯ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ২৮ শতাংশের বকেয়া রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন