তৃণমূলের মুখ্যসচিব তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যেই হেফাজতে নিয়েছে ইডি। এই প্রসঙ্গে আজ শনিবার সাংবাদিকদের সামনে সরব হলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র কটাক্ষ করে সেলিম বলেন, "সচিব শব্দটা কেন বলবো? মহাচোর বলা যায়। মদন যখন ধরা পড়েছিল তখন মমতা ব্যানার্জী নিজেই বলেছিলেন 'আমরা সবাই চোর!'। চোরেদের সরকারে এখন বিভিন্ন রকমের চোর আছে। চোর, বড়চোর, মাঝারি চোর, মহাচোর, সততার প্রতীকওয়ালা চোর সবাই আছে। নামগুলোই শুধু প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, মুখ্যসচিব করে দেয়। নামে কী এসে যায়? ওগুলো ডাক নাম।"
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ২৫ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। তৃণমূলের তরফ থেকে বলা হয়েছে এই ঘটনার সাথে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে সেলিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "কী একটা কথা ছিল না, শুঁড়ির সাক্ষী মাতাল? বাংলায় এই প্রবাদটা আছে। তা আর কাউকে পেল না? এরকম তো যখন কুণালকেও ধরেছিল তখনও বলেছিল দলের সাথে কোনও যোগাযোগ নেই। তারপর আবার তাঁকেই মুখপাত্র করা হয়েছে। কাজেই একথার গুরুত্ব কী আছে?"
সেলিম আরও বলেন, "ওরকম লোকজনকে ভায়া অ্যাপয়েন্ট করা যায়। সারদা গ্রুপ অ্যাপয়েন্ট করেছিল টাকা দিয়ে। এখন মমতা ব্যানার্জী অ্যাপয়েন্ট করেছেন। যেরকম মাইক ভাড়া পাওয়া যায়, মাইকম্যান পাওয়া যায়, মাইক্রোফোন পাওয়া যায়, সেরকম স্পোকপার্সনও পাওয়া যায় ভাড়ায়। মমতা ব্যানার্জী কী বলছেন সেটাই বড় কথা। ওখানে (তৃণমূলে) বাকি তো সব ল্যাম্পপোস্ট, পোস্ট তো শুধু একটাই। তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) এখন কেন নিশ্চুপ?"
তৃণমূলকে একহাত নিয়ে সেলিম বলেন, "অদল-বদল, একে ধরে ওকে ছেড়ে দাও। এটা তৃণমূলকেও বুঝতে হবে। জোর করে যে যাই বলুক, মমতা ব্যানার্জী আসলে যা করে নিজেকে বাঁচানোর জন্য। যদিও সব অপরাধীই তাই করে। নিজের ঘনিষ্ঠ, নিজের পরিবারকে বাঁচানোর জন্য তিনি এরকম এক-আধটাকে বলির পাঁঠা করতে রাজি আছেন।"
বারংবার দলবদল প্রসঙ্গে সেলিম বলেছেন, "নারদা কাণ্ডে বিজেপির আদবানি, লোকসভার এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। আজ পর্যন্ত তদন্ত হয়নি। তাহলে দিল্লিতে সেটিং? কয়লা পাচারকাণ্ডে ভাইপো (অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়) এবং ভাইপোর বউয়ের বিরুদ্ধে এমন যথেষ্ট প্রমাণ আছে যে এতদিনে জেলে যেতে হতো তাঁদের। রেড করলে দেখা যাবে লন্ডন, সুইজারল্যান্ড, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মুম্বাই এই সর্বত্র টাকার হদিশ পাওয়া গেছে। যত রকমের পাচারকাণ্ড সব হয়েছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন