দীর্ঘদিন ধরে কানাঘুষো চলছিল। এবার অকপট স্বীকারোক্তি রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। সোমবার টাটা শিল্পগোষ্ঠীকে রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, 'টাটা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কোনও লড়াই ছিল না। বাংলায় তাঁদের স্বাগত।'
উল্লেখ্য, রাজ্যের রাজনৈতিক পালা পরিবর্তনের মূল কেন্দ্র বিন্দু ছিলো টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো কারখানা। তারপর থেকে পার হয়ে গিয়েছে ১৩ বছর হয়ে গিয়েছে। ন্যানো কারখানা এখন গুজরাটের পন্থ নগরে। সিঙ্গুরের চাষীরা অনেক আগেই উপলব্ধি করেছিলেন টাটাকে শিল্প করতে না দেওয়ার ভুল। এবার সেই বোধোদয়ের সুর মন্ত্রীর গলাতেও। এমনটাই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।
বাম আমলে টাটা গোষ্ঠীর ন্যানো কারখানার জমি অধিগ্রহণ নীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল এলাকার মানুষ। সেই জমি বাঁচানোর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেই সময়কার বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছিলো বিজেপি, কংগ্রেস সহ দেশের একাধিক রাজনৈতিক দল এবং ব্যক্তিত্ব। আন্দোলনের জেরে শেষপর্যন্ত বাংলা ছেড়ে গুজরাটে পাড়ি দিয়েছিল রতন টাটারা।
কিন্তু ১৩ বছর কেটে গেছে, রাজ্যের উন্নয়ন হলেও বাংলায় শিল্প বিনিয়োগ নিয়ে বরাবরই বিরোধীদের নিশানায় মুখ্যমন্ত্রী। সেই বদনাম ঘোচাতে রাজ্যে বিনিয়োগে জোর দিয়ছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শিল্প তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করেছে রাজ্যের সরকার। এমন পরিস্থিতি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর টাটাকে স্বাগত জানানোর মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এদিন সংবাদ সংস্থা পিটিআইএর কাছে পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'টাটাগোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের কোনও শত্রুতা ছিল না। আমরা ওঁদের বিরুদ্ধে কোনওদিন লড়াই করিনি। ওঁরা গোটা বিশ্ব তথা ভারতের তাবড় তাবড় শিল্পগোষ্ঠীদের মধ্যে অন্যতম। ওদের তো দোষ দেওয়া যায় না।' তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সমস্যা ছিল বামেদের জোর করে জমি অধিগ্রহণ নীতি নিয়ে। রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য টাটাগোষ্ঠী সবসময় স্বাগত জানাই।' শিল্পমন্ত্রীর এ হেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই দাবি বিশিষ্ট মহলের।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন