ভারতের ইতিহাসচর্চা সম্পর্কে একটা কথা একসময় বেশ প্রচলিত ছিল - ‘ও পড়ে আর কী হবে? ইতিহাস তো ৪৭-এই শেষ’। কিছুটা ব্যঙ্গ, কিছুটা হাস্যরস মিশে থাকা উক্তি। ইতিহাসের গতিকে কী আর মানুষের ঠিক করে দেওয়া ওইরকম একটা তারিখে বেঁধে ফেলা যায়? যায় না। ক্লোয়েস্টার্ড অ্যাকাডেমিক ইতিহাস চর্চার বাইরে যে একটি বিশাল পপুলার ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্র আছে, মানুষ যে চর্চায় অতীতকে বর্তমানের প্রেক্ষিতে সাধারণ ভাবে দেখে থাকে, তাতে এইরকম ভাবেই একেকটা যুগ ‘শেষ’ হয়।
সহজ করে অতীতকে দেখার জন্য এ মন্দ নয়, মন্দ নয় বলেই প্রাথমিক বা মাধ্যমিক স্তরেও এইরকম যুগ বিভাজনের মাধ্যমে ইতিহাস শেখানো হয়। এইরকমই একটা যুগবিভাজনের সময় হল ১৯৯১ সালের সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন। ভারতের ইতিহাস যদি ৪৭-এ শেষ হয়, আধুনিক ইউরোপের মাধ্যমিক স্তরের ইতিহাস শেষ হয় ১৯৯১-তে। শেষ তো বটেই, সোভিয়েতের পতন অবশ্যই একটি যুগের অন্ত। এই পতন শুধু একটা দেশের পতন তো শুধু ছিল না, এটিকে আমরা প্রথম ফরাসী প্রজাতন্ত্রের পতনের সঙ্গে তুলনা করতে পারি – যেখানে বিপ্লবের হোমাগ্নি থেকে উঠে আসা সমস্ত আদর্শই, সে যত পবিত্রই হোক, প্রশ্নের মুখে পড়ে নিকষ কালো প্রতিক্রিয়ায় অন্ধকারে পুনরায় নিক্ষিপ্ত হল। এই সময় তো আমাদেরই মেটারনিখ যুগ, প্রতিক্রিয়া আর রক্ষণশীল রাজনীতির বিজয়ের যুগ। তবুও সময়ের কাঁটা থেমে থাকে না, তা সামনে এগিয়ে চলে। তাই জীবন মুখোপাধ্যায়ের পাঠ্যপুস্তক ও ফুকুয়ামা সাহেব যাই বলুন, ১৯৯১-তেই ইতিহাস শেষ না, ‘End of history’- না। রোনাল্ড রেগান কথিত ‘Evil Empire’-এর পতন হল, সাধারণ মানুষ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে বাঁচলেন – আমাদের কথাটিও ফুরলো, নটে গাছটি মুড়লো, এত সহজ সরল বিষয়টা আদৌ নয়। অতিসরলীকৃত এই ইতিহাসে ১৯৯১ সালে গৃহীত একখানা আস্ত গণভোটের কথা কোথায়? যেখানে পশ্চিমি মতেই মুক্ত ও অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন বজায় রাখার স্বপক্ষে ভোট দান করেছিলেন ৭৭.৮৫% মানুষ? যে জনমত অগ্রাহ্য করে সোভিয়েত ইউনিয়নকে জনতার নামে বিখন্ডিত করেছিল ইয়েলেতসিনরা? কোথায় সোভিয়েতের পতনের পর অলিগার্কদের উত্থান, গলা-কাটা পুঁজিবাদ ও মাফিয়ারাজের সূচনার গল্প? কোথায় ১৯৯৩-এর ভোটে কমিউনিস্টদের মুক্ত নির্বাচন’-এ বিপুল বিজয় ও তারপরে ট্যাঙ্ক নামিয়ে মার্কিন সহায়তায় ‘গণতন্ত্রের রক্ষক’ ‘রাশিয়ার মুক্তিদাতা’ ইয়েলেতসিনের ক্ষমতা ধরে রাখার কাহিনী? থাকবে না। থাকা সম্ভবপর নয়।
১৯৯১ পরবর্তী নব্য-উদারনীতির শক্তি সারা বিশ্বজুড়ে একটি লৌহবর্ম পরিহিত ভাষ্য রচনা করেছে। সেই ভাষ্যের স্বপক্ষে যা কিছু, তা ‘অথেন্টিক’ বলে গণ্য হবে আর সেই ভাষ্যের বিপক্ষে যা কিছু তাই ‘প্রোপাগান্ডা’ বলে গৃহীত হবে। এই দেশেও সোভিয়েতের পতনকে ঘিরে উল্লাস শোনা যায় দক্ষিণপন্থীদের মুখে। তাঁদের কথাও কিন্তু, একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ৯১-তেই শেষ। তারপরের ঘটনার কথা প্রায় তিনটি দশকে রাশিয়া ও পোস্ট-সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলিতে এবং পূর্ব ইউরোপে কেন সাংঘাতিক রকম পূর্বতন ব্যবস্থা নিয়ে নস্টালজিয়া বর্তমান, তা নিয়ে তাঁরা হিরণ্ময় নীরবতা পালন করাই সমীচীন মনে করেন। কেন, পরিসংখ্যানের দিকে (এক্ষেত্রে শুধু রাশিয়ার পরিসংখ্যানই ধরা হচ্ছে,, সামগ্রিক পূর্ব ইউরোপ নিয়ে আলোচনা করার পরিসর এই প্রবন্ধে নেই) চোখ বোলালেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।
‘আপনার নিকট কি সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন পরিতাপের বিষয়?’ – এই প্রশ্নে লেভাদা সেন্টার ১৯৯২ থেকে সমীক্ষা করে চলেছে। এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর দাতার সংখ্যা একবার মাত্র ৫০ শতাংশের নিচে নেমেছে, ২০১২ সালে যখন ৪৯% জবাব দেন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন একটি পরিতাপের বিষয়। শেষ সমীক্ষা অনুসারে ২০২০ সালে সমীক্ষা অনুসারে ৬৫% মানুষ মনে করেন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন একটি পরিতাপের বিষয়, ২৬% মানুষ মনে করেন এটি পরিতাপের বিষয় নয় এবং ৯% মানুষ মনে করেন এই বিষয়ে মতামত প্রদান কঠিন। ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন কি একটি বিপর্যয় ছিল ?’-এই প্রশ্নে ২০১৯-এ পিউ রিসার্চ সেন্টারের চালানো সমীক্ষার ফলও একই রকম, এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর দিয়েছিলেন ৬৩% রাশিয়ান। এখানেই শেষ নয়, পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১৯-এ নেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে ৬২ % মানুষ পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এবং মাত্র ২৭% মানুষ মনে করেন বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সোভিয়েত জমানার থেকে ভালো। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে কারা লাভবান হয়েছে, এই প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ানরা আরও এককাট্টা, তাঁরা ৯০-এর দশকের অলিগার্ক রাজ ভোলেননি। এক্ষেত্রে ৭০% উত্তর দিয়েছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে সবথেকে লাভবান হয়েছে পুঁজিপতিরা, মাত্র ২২% রাশিয়ান মনে করেছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে সাধারণ মানুষ লাভবান হয়েছেন। এখানে আরেকটা লক্ষণীয় তথ্য উঠে এসেছে – যাঁরা সোভিয়েত আমল নিজের চোখে দেখেছেন – তাঁরা এই প্রসঙ্গে সর্বাপেক্ষা সোচ্চার, যে সোভিয়েতের পতনে সাধারণ মানুষের কোন উপকার হয় নি। সোভিয়েত দেখেছেন, এমন মানুষদের মধ্যে যখন সমীক্ষা চালানো হয়েছে – তখন ৭৭% মানুষই মনে করছেন সোভিয়েতের পতনে কোন উপকার হয় নি। কোন তিনটি বিষয়ে সোভিয়েত আমলের তুলনায় অধিকাংশ মানুষ উন্নতি হয়নি মনে করেন, তা আন্দাজ করার পুরস্কার নেই – স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান।
এই পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের মনে যে সোভিয়েত ব্যবস্থার প্রতি প্রবল একরকম নস্টালজিয়া জন্ম নেবে, এ একেবারেই স্বাভাবিক। এই নস্টালজিয়াকে নস্যাৎ করে অনেকে বলেন, এ হল পুতিন আমলের প্রোপাগান্ডার ফল বা এ হল একপ্রকার বৃদ্ধদের যৌবন রোমন্থন। দুটি বক্তব্যই ভ্রান্ত। সোভিয়েত নস্টালজিয়া রাশিয়ার যুব সমাজের মধ্যেও প্রবল ভাবে বিদ্যমান এবং পুতিন শাসনব্যবস্থা তার প্রোপাগান্ডাতে যে প্রো-সোভিয়েত (অবশ্য সব ক্ষেত্রে না) সুর অনেক সময় তোলে, তার কারণ এই আবেগটাকে তারা নিজেদের জনসমর্থন বাড়াতে কাজে লাগাতে চায়। এই কথাও বলা হয় যে সোভিয়েত জমানার স্মৃতি রঙিন চশমাতে দেখা হয়, খারাপগুলি মনে রাখা হয় না। এ দৃষ্টিভঙ্গিও ভ্রান্ত। রেভোলিউশানারি রিপোর্ট, রাশিয়া টুডে টেলে এস.ইউ.আর, থেকে রেডিও ফ্রি ইউরোপ (যাকে প্রো কমিউনিস্ট দোষে কেউ দুষ্ট করতে পারবে না) – যে কোন আউটলেটের সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রসঙ্গে রাশিয়ার জনগণের সাক্ষাৎকার দেখলেই বোঝা যায় তাঁদের মত কতটা জটিল। দুটি জিনিস বার বার উঠে এসেছে – স্থিতাবস্থা ও বিশ্বাস। কাল কী খেতে হবে, মাথার উপর ছাদ থাকবে কিনা, চিকিৎসা হবে কিনা, চাকরি হবে কিনা – এই চিন্তা মানুষের ছিল না। আহামরি না হলেও সারা দেশের মানুষের খাবার দাবারের বন্দোবস্ত ছিল। এই স্থিতাবস্থাই সৃষ্টি করেছিল মানুষের সঙ্গে মানুষের বিশ্বাসের। সোভিয়েত আমল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অনেকের মূল সুর এই, সেই সময় মানুষ একে অপরকে পরস্পরের টাকা, সম্পত্তি, চাকরির প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবত না। মানুষ মানুষের পাশে থাকত। শিক্ষা আর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন অনেকে। এখন রাশিয়ায় সোভিয়েত আমলের থেকেও ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রও হয়েছে – কিন্তু সেগুলি অধিকাংশ সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে। গণ-শিক্ষা ও গণ-স্বাস্থ্যের আদর্শটাই ধ্বসে পড়েছে। অলিগার্ক ও রাশিয়ান ব্রাটভার কথা উঠে এসেছে অনেকের বয়ানে। ৯০-এর দশকে রাষ্ট্রয়ত্ত্ব সংস্থাগুলি লুটে ফাটকায় ধনিক শ্রেণী এই অলিগার্করা রাশিয়ার নাগপাশ, আর তাদেরই দোসর রুশ আন্ডারওয়ার্ল্ড। সোভিয়েত আমলে সংগঠিত অপরাধের এই চিত্রটিই ছিল অনুপস্থিত।
কিন্তু এর পাশাপাশি সোভিয়েত ব্যবস্থার খারাপ দিকগুলির কথাও মানুষ ভোলেননি। রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে সাক্ষাৎকারে, পার্টিতন্ত্রের কথা এসেছে এসেছে ভোগ্য পণ্যের অভাবের কথা। বেশ কয়েকজন মত দিয়েছেন আগে টাকা ছিল, কিন্তু কেনার মতো জিনিস ছিল না আর এখন জিনিস আছে কিন্তু কেনার মতো টাকা নেই। সাইবেরিয়া, ও দক্ষিণ রাশিয়ার সাক্ষাৎকারগুলি আরও চিত্তাকর্ষক। এই অঞ্চলটি রাশিয়ায় ‘Red Belt’ নামে পরিচিত। সোভিয়েত উত্তর রুশ কমিউনিস্ট পার্টি এখানে এখনও শক্তিশালী। এখানকার নাগরিকদের অভিযোগ কিছু আলাদা। তাঁদের মতে কাঁচামাল সমৃদ্ধ এই এলাকাগুলোর সম্পদ ইউরোপকে বিক্রি করে মস্কো-সেন্ট পিটার্সবার্গ সমৃদ্ধ হয়, কিন্তু এই অঞ্চলগুলির অবস্থা যেই কে সেই। সোভিয়েত আমলে যে বড়ো শহরের বাইরেও একটা দেশ আছে, এটা মাথায় রাখা হত ও এই অঞ্চলগুলির উন্নয়নেও জোর দেওয়া হত, সেই কথা অনেকেই বললেন।
সুতরাং সামগ্রিক ভাবে যদি আমরা প্রত্যক্ষ সাক্ষাৎকারগুলো দেখি, তাহলে পূর্ববর্তী সমীক্ষার পেছনের অর্থ বোঝা যায়। বর্তমান রাশিয়ায় সোভিয়েত নস্টালজিয়াকে আমরা কোনভাবেই শুধু প্রোপাগান্ডার ফসল বা যৌবনের স্মৃতি রোমন্থন বলতে পারি না। বরং তা হল ৯০-এর দশকের নব্য-উদারনীতির তান্ডবের ফলাফল। রাশিয়ায় কমিউনিজম না, নিও-লিবেরালিজম হল ‘God that failed’। এমন নয় মানুষ মনে করেন সোভিয়েত ইউনিয়ন ত্রুটিপূর্ণ ছিল না, কিন্তু তার পাশাপাশি এও তাঁরা মনে করেন, ঠিক যেমন ১৯৯১-এর গণভোট দেওয়ার সময়ও মনে করেছিলেন – সোভিয়েত ইউনিয়নের বিকল্প হল আরও উন্নত, গণতান্ত্রিক ও আধুনিক এক সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত নস্টালজিয়া বর্তমানে এমনই যে কিছু মানুষ নিজেদের আর রুশ নাগরিক বলেও মানতে চাইছেন না। তাঁরা নিজেদেরকে সোভিয়েত নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতেই পছন্দ করেন। সোভিয়েত পরিচয় পত্র ,নাগরিকত্বের নথি, পাসপোর্টের রমরমা। এঁরা মনে করেন যেহেতু আইন ভঙ্গ করে, জনমত অগ্রাহ্য করে ইউনিয়ন ভাঙা হয়েছিল, তাই সোভিয়েত বৈধ ভাবে এখনও বর্তমান ও তাঁরা এখনও সোভিয়েত নাগরিক। এই নতুন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ইউরোস্লাভবাসী জনৈক আলেকজান্ডার উলিয়ানভ সোভিয়েত নাম্বার প্লেট লাগানো গাড়িতে যাতায়াত করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। তার সঙ্গে পুলিশ অফিসারের কথোপকথন ভাইরাল হয়েছিল গত বছরই। কেন সোভিয়েত লাইসেন্স লাগিয়ে ঘুরছে, অফিসারের এই জবাবে উলিয়ানভ বলেছিল – ‘আপনার জন্ম কত সালে ?’ ‘১৯৮৫’ ‘কোন দেশ ?’ ‘ইউ.এস.এস.আর’ ‘কেউ কি আপনার থেকে সোভিয়েত নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছে?’ ‘আরে আপনার বক্তব্যটা কি বলুন তো!’ ‘যে আমার মতো আপনিও রুশ নাগরিক নন, আপনি সোভিয়েত নাগরিক।‘ বলতে বলতেই সহাস্যে অফিসারের মুখের সামনে সোভিয়েত আমলের মতো করে ইস্যু করা লাইসেন্স মেলে ধরেছিলেন আলেকজান্ডার ‘বুঝলেন না? সোভিয়েত ক্ষমতার সব শাখা আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে।‘ অদ্ভুত নিশ্চয়ই, কিছুটা বাস্তববিমুখতার পরিচয়ও বটে, কিন্তু এই আবেগটা খাঁটি – এবং এমনকি চুড়ান্ত দক্ষিণপন্থীরাও যারা রাশিয়ার খবর রাখেন, তাঁরা জানেন এই আবেগটা সর্বব্যাপী।
এখন প্রশ্ন এটা নয়, যে সোভিয়েতের মানুষ সোভিয়েতের পতনে দুঃখবোধ করেন কি করেন না, প্রশ্ন এটাও নয় যে এই নস্টালজিয়া সাময়িক কি সাময়িক না – কারণ তার উত্তর তথ্যের ভিত্তিতেই আমাদের কাছে আছে যে তাঁরা সোভিয়েতের পতনে গভীর বেদনা অনুভব করেন ও গত তিন দশকে সোভিয়েত নস্টালজিয়া বেড়েছে বই কমেনি। প্রশ্ন বরং এই জায়গায় যে, সেই আবেগ কি শুধু এই প্রতীকী কাজকর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে? সোভিয়েত নস্টালজিয়া কি শুধুই সোভিয়েত থিমের রেস্তোরাঁ, সোভিয়েত সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, সোভিয়েত থিমড ভোগ্যপণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি তার কোন গভীর রাজনৈতিক ও সামাজিক বহিঃপ্রকাশও ঘটবে? মস্কোর হায়ার স্কুল অফ ইকোনমিক্সের সমাজতত্ত্ববিদ গ্রেগরি ইউডিনের মতে – ঘটবে। তিনি মনে করেন এই নস্টালজিয়া প্রকৃতপক্ষে – ‘…a nostalgia driven by a demand for social justice and for equality.’ অধিকাংশ বিশেষজ্ঞেরই তাই মত। এই নস্টালজিয়া শুধু পেছনে তাকানোর নস্টালজিয়া নয় – বরং পেছনের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে নতুন কিছু নির্মাণের নস্টালজিয়া। সেই নির্মাণ আদৌ হবে কিনা, তার উত্তরও রয়েছে ভবিষ্যতের গর্ভেই। ১৯৯১ সালে ইতিহাস শেষ হয়ে যায় নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন