১৯৮০ সালে এম বি হানিফা প্রথম ভারতে ব্যবহারের জন্য ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন তৈরি করেন। ১৯৮৯ সালে ভারতের নির্বাচন কমিশন, ভারত ইলেক্ট্রনিকস লিমিটেড এবং ইলেক্ট্রনিকস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া একসাথে ই ভি এম’কে মান্যতা দেয়। ১৯৯৯ সাল থেকে ভারতের সাধারণ এবং বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে ই ভি এম’র ব্যবহার শুরু হয়।
কাগজবিহীন এই ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রে ভোটদান এবং ভোট গণনার কাজ আগেকার ব্যালট ব্যবস্থার চেয়ে অনেক দ্রুত হয়। ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থাপনার ফলে আরেকটি বড় যুক্তি উঠে আসে অভ্রান্তি এবং নিরাপত্তার। ভারতের নির্বাচন কমিশন ই ভি এম’কে মান্যতা দেবার পর থেকেই দাবি করে এসেছে ই ভি এম সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং কোনভাবেই একে প্রভাবিত (হ্যাকিং অথবা অন্যান্য অবৈধ উপায়সমূহ) করা যায় না, এতে নথিবদ্ধ ভোটের হিসাব কোনভাবেই অদল-বদল করা সম্ভব নয়। যদিও শেষ কয়েকটা বিধানসভা এবং সাধারণ নির্বাচনের পরে ই ভি এম’র বিরুদ্ধে নানা রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস গবেষণা সংস্থার পক্ষ থেকে ই ভি এম’র-এ অস্বচ্ছতার অভিযোগ ওঠে।
২০১০ সালে ভারতের নির্বাচন কমিশন আই আই টি মুম্বই’র অধ্যাপক পি ভি ইন্দ্রসেন’র নেতৃত্বে একটি টেকনিক্যাল টিম তৈরি করে, যার কাজ ছিল ই ভি এম’কে আরও স্বচ্ছ এবং নিরাপদ করে তুলতে সবকটি রাজনৈতিক দলের সুপারিশ মত একটি কাগজ যুক্ত ইউনিট প্রস্তুতির যা ভোটারকে ভোটদান অনুসারে একটি স্লিপ ইস্যু করবে। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট ই ভি এমের সাথে ভি ভি প্যাট ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। মূল ই ভি এম কাগজবিহীন ছিল।
বিস্তারিত গবেষণায় দেখা যায় দু’ভাবে ইভিএম-কে হ্যাক করা যেতে পারে; একটি পদ্ধতিতে ভোটের দিন ই ভি এমে নথিবদ্ধ কোন প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের হার জানা যায় ভোট শেষ হবার আগেই। আরেকটি উপায়ে দেখা যায় ই ভি এমে নথিবদ্ধ সমস্ত ভোট গননার আগে যে কোন সময় পছন্দমতো অদল-বদল করা যায়। এই দুটি উপায়ই সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের (ইলেক্ট্রনিকস) কাজ জানা যে কেউই প্রয়োগ করতে পারে।
২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও ভারতের নির্বাচন কমিশন সমস্ত নির্বাচনে সবকটি বুথে ভোটার ভেরিফায়েড পেপার অডিট ট্রেল বা ভি ভি প্যাট’র ব্যবহার এখনও শুরু হয়নি। তারা জানিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো ভি ভি প্যাট-এর ব্যবহার শুরু করতে পারবে।
সারা পৃথিবীতে প্রযুক্তিগতভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, ইতালি, ভেনেজুয়েলা প্রভৃতি দেশে ইভিএম-এর ব্যবহার শুরু হলেও পরে অস্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তাহীনতার কারণে ইভিএম’র ব্যবহার বন্ধ করেছে।
গবেষণামূলক সূত্রসমূহ : 1. www.india.com
https:// IndiaEVM.org
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন