'বয়স একটি সংখ্যামাত্র' - প্রবাদটিকে আবার সত্য প্রমাণ করেলন ৮০ বছর বয়সী নন্দকুমার কে. মেনন। তিনি এইবছর আই.আই.টি মাদ্রাজের প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, মেনন চলতি বছরের আগস্ট মাসে ৮১ বছরে পা দেবেন।
আই.আই.টি-র প্রোগ্রামিং এবং ডেটা সায়েন্সের অনলাইন কোর্সে ভর্তির জন্য এই প্রবেশিকা পরীক্ষাটি হয়েছিল। রবিবার (৫ই জুন), কেরালার আলুভায়, একটি আই.টি ফার্ম প্রাঙ্গণে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, মেনন একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁকে পরীক্ষা হলের গেটে নিরাপত্তারক্ষীরা থামিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের বোঝাতে হয়েছিল যে তিনিও এই প্রবেশিকা পরীক্ষার একজন প্রার্থী। চার ঘণ্টার এই পরীক্ষায় পরীক্ষাকেন্দ্রে মোট ১২০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি ছিলেন তরুণ প্রার্থী। সে বিষয়ে মেনন বলেছেন, তিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে যা শিখেছিলেন তা এখন এই পরীক্ষায় কাজে লাগছে।
পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে এই ৮০ বছরের পরীক্ষাপ্রার্থী বলেছেন, প্রস্তুতির জন্য তাঁকে প্রতিদিন ভোর সাড়ে ৫টায় ঘুম থেকে উঠতে হত এবং জন্য রাত ১০টা পর্যন্ত পড়াশোনা চলত। আরও বলেন, তাঁর ছেলে সেতু নন্দকুমার, যিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (UAE)-র একজন আইনজীবী। তাঁরা এক সাথে চারটি বিষয়ে (গণিত, পরিসংখ্যান, ডেটা প্রসেসিং এবং ইংরাজি) অনলাইন ক্লাস করতেন। এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার জন্য সমস্ত বিষয়ে ন্যূনতম ৫০% নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
ভারতবিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার 'এম. বিশ্বেশ্বরাই' –এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, মেনন চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই একজন ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছিলেন। তবে, আর্থিক অসুবিধার সম্মুখীন হয়ে তিনি গণিতে স্নাতক হন এবং এক বছর পরিসংখ্যান বিষয়ে এম.এস.সি করেন। তারপর তিনি ‘ত্রিভান্দ্রম কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং’ থেকে স্নাতক হন। ইল্লেখ্য, নাসা (NASA) স্পন্সরশিপ বৃত্তি অর্জন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'সিরাকুজ বিশ্ববিদ্যালয়' থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর পাস করেন তিনি।
নন্দকুমার কে. মেনন, গ্রিনকার্ড পেয়েছিলেন যা একজন অমার্কিন নাগরিককে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয়। কিন্তু নিজের জন্মভূমিতেই ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার জন্য তিনি সেই সুযোগ ছেড়ে দিয়েছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন