অনুমতি ছাড়াই কয়েকশো মুসলিম মহিলার নাম ও ছবি প্রকাশ করে তাঁদের ‘নিলাম’-এর জন্য তালিকাভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ‘বুল্লি বাই’ নামক একটি অ্যাপের বিরুদ্ধে। এই অ্যাপ তৈরির মূল কারিগর নীরজ বিষ্ণোইকে অসমের জোড়হাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় নীরজ বিষ্ণোইকে তার জঘন্য কাজের জন্য কোনও অনুশোচনা করতে দেখা যায়নি। উল্টে তার দাবি, সে ‘সঠিক’ কাজ করেছে।
২১ বছর বয়সী বিষ্ণোই ভোপালের একটি ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের BTech ছাত্র। দিল্লি পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, তাঁরা অ্যাপ তৈরি করার ডিভাইসটি উদ্ধার করেছেন। অ্যাপটি মূলত মাইক্রোসফটের শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম গিটহাবে হোস্ট করা হয়েছিল। অভিযুক্তকে আপাতত সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নীরজ বিষ্ণোই হল চতুর্থ ব্যক্তি যে ‘বুল্লি বাই’ অ্যাপের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে। এর আগে মায়াঙ্ক রাওয়াল (২১), শ্বেতা সিং; এবং বিশাল কুমার ঝাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুম্বাই পুলিশ শ্বেতা সিংকে এই ঘটনার “মাস্টারমাইন্ড” হিসাবে বর্ণনা করেছে।
প্রসঙ্গত গত ১ জানুয়ারি বুল্লি বাই অ্যাপটির ঘটনা প্রকাশ্যে আসে যখন সাংবাদিক ইসমত আরা বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অ্যাপের সাহায্যে অনুমতি ছাড়াই মুসলিম মহিলাদের অশ্লীল ছবি এবং নাম প্রকাশ করে তাঁদের 'নিলামের' জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই মহিলাদের বেশিরভাগই বর্তমানে পড়ুয়া এবং কোনো না কোনো সময় মোদী সরকার ও বিজেপির সমালোচনা করেছেন। এঁদের অপমান এবং হয়রানি করতেই অশ্লীল ছবি প্রকাশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রায় এক বছর আগে একইভাবে মুসলিম মহিলাদের নাম ও ছবি দিয়ে তাঁদের নিলামে তোলার অভিযোগ উঠেছিল “সুল্লি ডিল” নামে একটি অ্যাপের বিরুদ্ধে। এই অ্যাপটিও GitHub-এর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। দক্ষিণপন্থীরা মুসলিম মহিলাদের অপমান করার জন্য 'সুল্লি' শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। অ্যাপটির আসল উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম মহিলাদের অপমান এবং হয়রানি করা। দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশে সুল্লি ডিল নিয়ে দুটি এফআইআর দায়ের করা হলেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন