আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ডিপফেক ভিডিও নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় রেল তথা তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বৃহস্পতিবার এই ডিপফেক ভিডিওর অপব্যবহার রুখতে কেন্দ্রের নয়া নিয়মবিধির কথা ঘোষণা করলেন। বৈষ্ণব জানালেন, কেন্দ্রীয় সরকার খুব শীঘ্রই ডিপফেক ভিডিও প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে নয়া বিধিনিষেধ আরোপ করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার ভার্চুয়াল জি২০ সম্মেলনের বৈঠকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-এর ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরেই কেন্দ্রীয় তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রকের তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই ডিপফেক ভিডিওর ইস্যু নিয়ে সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলির সঙ্গে কথা বলেন তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বৈঠক শেষে তিনি জানান, কোম্পানিগুলি এইধরণের ভুয়ো ভিডিও শনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, রিপোর্টিং প্রক্রিয়া শক্তিশালী করা এবং ব্যবহারকারীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর মতো কঠিন পদক্ষেপগুলির প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে।
সাংবাদিকদের বৈষ্ণব জানিয়েছেন, “আমরা আজ থেকেই নিয়মবিধির একটি খসড়া তৈরি করা শুরু করব। খুব তাড়াতাড়িই ডিপফেক প্রতিরোধের জন্য নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। পুরনো বিধির কাঠামোকেই সংশোধন করে বা নতুন নিয়ম অথবা নতুন আইন হিসেবে এই নয়া বিধিনিষেধ আনা হতে পারে।” এদিন ডিপফেক ভিডিওকে গণতন্ত্রের জন্য নতুন ‘হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, “ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আমরা এই নিয়ে আবারও একটি বৈঠকে বসবো। আজকের এই সিদ্ধান্তের ফলো-আপ করা হবে ওইদিন। এছাড়াও, খসড়া নিয়মবিধিতে নতুন কিছু যোগ করা যায় কি না, সেই নিয়েও আলোচনা হবে।”
প্রসঙ্গত, বর্তমানে এআই ব্যবহার করে একজনের শরীরে অন্যজনের মুখ বা একজনের মুখের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে অন্যজনের শরীর। এভাবেই তৈরি হচ্ছে জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের ‘ডিপফেক’ ভিডিও। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেইসব ভিডিও অশালীন ও কুরুচিকর হয়ে উঠছে।
ইতিমধ্যেই দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশ্মিকা মান্দানা, বলিউড অভিনেত্রী কাজল ও ক্যাটরিনা ক্যাইফের ডিপফেক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। বলিউডের ‘বিগ বি’ অমিতাভ-সহ একাধিক অভিনেতাও এই নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও এই ডিপফেক ভিডিও নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানিয়েছেন, এইধরণের ডিপফেক ভিডিও বানানো ও প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট ধৃত ব্যক্তির ১ লক্ষ টাকার জরিমানা ও ৩ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন