কোনও সমালোচনা পছন্দ করতো না মোদী সরকার। কোনও অ্যাকাউন্টের রাজনৈতিক বক্তব্য অপছন্দ হলে, সেই নির্দিষ্ট টুইটকে ব্লক করার বা আটকে দেওয়ার নির্দেশের বদলে, সংশ্লিষ্ট টুইটার আকাউন্টকেই ব্লক করার নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্র। এমনই অভিযোগ তুলে কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে টুইটার (Twitter)।
সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (PTI) সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার কর্ণাটক হাইকোর্টে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার যে টুইটার অ্যাকাউন্টগুলিকে ব্লক করতে চায়, তার ৫০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশই ‘দোষ মুক্ত’।
এই ইস্যুতে টুইটারের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী অরবিন্দ দাতার জানান, ভারতের তথ্য প্রযুক্তি আইনে বলা থাকলেও অ্যাকাউন্ট ব্লক করার আগে- অ্যাকাউন্টধারীদের নোটিশ পাঠাতে দেওয়া হচ্ছে না। ভারত সরকারের এই পদক্ষেপ শুধু আইনের ধারা লঙ্ঘন করছে, তা নয়। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ও মানছে না।
সম্প্রতি, কয়েক হাজার টুইটার আকাউন্ট ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে টুইটার। মামলার আবেদনে টুইটার বলেছে, ভারত সরকারের নির্দেশ বাক-স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। কোনও টুইট সরকারের অপছন্দ হলে, তার বিষয়বস্তু নিয়ে অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের ব্যাখ্যা চাওয়ার পরিবর্তে, অ্যাকাউন্টটি ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে।
কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিতের সামনে আইনজীবী অরবিন্দ দাতার সাফ জানিয়েছেন, ‘অত্যধিক ক্ষমতা প্রদর্শন করছে কেন্দ্র।’ তিনি বলেন, ‘কিছু টুইট আছে, যেগুলি তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৬৯-এ ধারা অনুসারে সেগুলির উপর হস্তক্ষেপ করার কোনও নিশ্চয়তা দেয় না।’
টুইটার আদালতে জানিয়েছে, 'সরকার টুইটের পরিবর্তে ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে বলেছে। এই ধরনের পদক্ষেপের জন্য বিধিবদ্ধ সুরক্ষার প্রয়োজন। এছাড়া, অন্য একটি মামলায় দিল্লি হাইকোর্টে জানিয়েছে, শুধুমাত্র শেষ অবলম্বন (পন্থা) হিসাবে অ্যাকাউন্টগুলি ব্লক করার কথা বলতে পারে কেন্দ্র।'
প্রসঙ্গত, গত ১ সেপ্টেম্বর, কেন্দ্রের বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক এই মামলায় আদালতে হলফনামা দাখিল করে জানিয়েছে, তাদের পদক্ষেপগুলি আইনের পরিধির মধ্যে ছিল। টুইটারকে ‘habitual non-compliant’ প্ল্যাটফর্ম হিসাবে বর্ণনা করে, সরকার দাবি করেছে - কোন বিষয়বস্তু জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না মাইক্রো-ব্লগিং সাইট টুইটার।
জানা যাচ্ছে, কর্ণাটক হাইকোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৭ অক্টোবর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন