দেশ জুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’। যা নিয়ে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার ডিজিটাল গ্রেফতারি ও সাইবার অপরাধ ঠেকাতে পদক্ষেপ করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, এই অভিযোগের ভিত্তিতে ১৭ হাজার হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই পরিচালনা করা হচ্ছে কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, তাইল্যান্ডের মতো বেশ কয়েকটি দেশ থেকে।
সূত্রের খবর, ভারতীয় নাগরিকদের অনেক ক্ষেত্রে লাওস, কম্বোডিয়া, মায়ানমারের মতো দেশগুলিতে কাজের লোভ দেখাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। এরপর অনলাইনের মাধ্যমে তাঁদের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ সামনে আসছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার শাখার এক সূত্রের খবর, প্রতি দিন ডিজিটাল গ্রেফতারির মাধ্যমে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত সাইবার অপরাধীরা ২১৪০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অক্টোবর পর্যন্ত ৯২ হাজার ৩৩৪টি সাইবার অপরাধের মামলা নথিভুক্ত হয়েছে দেশে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতেই নজরদারি চালায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, সেই নজরদারি চালানোর সময় বেশ কিছু সন্দেহজনক অ্যাকাউন্টের হদিস পায় তারা। তখনই হোয়াট্সঅ্যাপ কর্তৃপক্ষকে ওই অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধের নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসে 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে ডিজিটাল গ্রেফতারি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “দেশে এমন কোনও গ্রেফতারিই নেই। সাইবার প্রতারকরা এটাকে নতুন অস্ত্র হিসেবে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। দেশের কোনও আইনে এর উল্লেখ নেই। তদন্তের জন্য কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা কখনোই কাউকে ফোনে যোগাযোগ করে বা ভিডিও কল করে তথ্য চায় না। এমন কল এলে কেউ ভয় পাবেন না। বরং প্রতারকদের কলটি রেকর্ড করুন। নিকটবর্তী থানায় অভিযোগ দায়ের করুন। প্রয়োজনে ন্যাশনাল সাইবার হেল্পলাইনে যোগাযোগ (নম্বর - ১৯৩০) করতে পারেন।“
কীভাবে হচ্ছে এই প্রতারণা? জানা যাচ্ছে প্রতারকরা আপনাকে ফোন করে সিবিআই, ইডি অথবা অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী শাখার অফিসার হিসেবে নিজের পরিচয় দেবে। আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানাবে। তাঁদের কাছ থেকে মাদক জাতীয় কোনও নিষিদ্ধ দ্রব্য পাওয়া গেছে জানানো হবে। অথবা আপনাকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে জানাতে পারেন। ভিডিও কল করে আপনার মুখ দেখতে চাইবে। উল্টো দিকের লোক পুলিশের মতোই পোশাক পরে থাকবে, যাতে সন্দেহের কোনও জায়গা না থাকে। যদি কেউ ভয় পায় তাহলে প্রতারকদের চাপসৃষ্টি করার কাজ আরও সহজ হয়ে যায়। প্রমাণ হিসেবে 'ভুয়ো' অ্যারেস্ট মেমো দেখাতে পারে। এরপর এই মামলা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করবে আপনার কাছে। এছাড়াও অন্যান্য নানা উপায়ে প্রতারকরা জালিয়াতি করছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন