মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর ও মছলিপত্তনমের মাঝামাঝি বাপাটলে উপকূলে ল্যান্ড করেছে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, পুদুচেরিতে ব্যাপক ধ্বংসলীলা চালানোর পর অবশেষে ঘূর্ণিঝড়টি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রবিবার থেকে লাগাতার বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চেন্নাইতে। অতিবৃষ্টির ফলে প্রাণ হারিয়েছে ১৭ জন মানুষ।
চেন্নাই পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক করা গেছে। জলমগ্ন রাস্তাগুলি ধীরে ধীরে জল মুক্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সমস্ত পদ্ধতিটিই হচ্ছে ধীর গতিতে। অন্যদিকে, ল্যান্ডফলের সময় গোটা শহর বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ছিল। ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ শতাংশ স্থানে বিদ্যুৎ ফেরানো গিয়েছে। বাকি জায়গায় দ্রুত বিদ্যুৎ ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) অতিরিক্ত দলকে ডাকা হয়েছে এবং ৩০০ টি নৌকা নিচু এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, অন্যান্য জেলা থেকে প্রায় ৫০০০ সরকারি কর্মী ত্রাণ তৎপরতায় যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন গ্রেটার চেন্নাই কর্পোরেশনের কমিশনার ডা জে রাধাকৃষ্ণাণ। তিনি জানিয়েছেন, খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী বিমানে করে নামানো হচ্ছে নিচু জায়গাগুলিতে। ওই নিচু এলাকাগুলি থেকে জল বের করার জন্য পাম্প চালানো হচ্ছে।
এই বন্যা পরিস্থিতিতে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন জানিয়েছেন, ৪০০০ কোটি টাকা ব্যয় করে অতিবৃষ্টির জল নিষ্কাশনের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে খুব সহজেই এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেছে। তিনি এই অতিবৃষ্টি পরিস্থিতিকে ’৪৭ বছরের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত’ বলে অভিহিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ক্রমশ অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এবং আগামী কিছু ঘণ্টার মধ্যে এই নিম্নচাপটি পুরোপুরি শক্তি হারিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে মনে করছে আবহাওয়া দপ্তর।
চেন্নাইয়ে আজ স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি গুরত্বপূর্ণ সড়ক, যেমন - কামরাজাল সরাই, ক্যাথেড্রাল, পন্ডি বাজার, আর কে সালাই এবং আনা সালাই রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক করা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন