বিরোধীদের বাধা সত্ত্বেও লোকসভায় পাস হয়ে গেল ডিজিটাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন বিল। এদিনও দফায় দফায় মণিপুর প্রসঙ্গে আলোচনার দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে লোকসভায়। এই বিলের বেশ কিছু আপত্তি জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। যদিও সেই আপত্তি উপেক্ষা করেই এদিন বিল পাস হয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার ৩ আগস্ট বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও এই বিল সংসদে পেশ করা হয়েছিল। এই বিলের বেশ কিছু বিষয়ে পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠানোর দাবি জানায় বিরোধীরা। বিরোধী সাংসদদের তীব্র বিরোধিতার মধ্যে লোকসভায় এই বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বিরোধীরা দাবি করেছিলেন, এই বিল নাগরিকদের গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনকারী। বিরোধীরা বিলটি বিবেচনার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি করে। প্রস্তাবিত বিলটিকে অর্থ বিল হিসাবে পেশ করার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি।
এই বিল নিয়ে বিরোধীরা মূলত তিনটি জায়গায় আপত্তি জানিয়েছিল। বিরোধীদের দাবি ছিল, এই বিল এর আগে সংসদীয় বোর্ড পর্যালোচনা করে খারিজ কর দিয়েছিল। এছাড়াও এই বিল নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকারের বিরোধী এবং এই বিলে সরকারকে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও ইলেক্ট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, এই বিল সংসদে পাস হওয়ার পরে সমস্ত নাগরিকের অধিকার রক্ষা করবে। জাতীয় নিরাপত্তা এবং মহামারী ও ভূমিকম্প ইত্যাদির মতো জরুরি পরিস্থিতিতে সরকারকে আইনগত হস্তক্ষেপের অনুমতি দেবে।
সারা দেশে নাগরিকদের ব্যক্তিদের তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করার অভিপ্রায়ে প্রাথমিকভাবে এই বিল সংসদে ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯-এ পেশ করা হয়েছিল। বিলে তথ্য সুরক্ষা, তথ্য ভাগ করে নেওয়া এবং তথ্য সংরক্ষণ সম্পর্কিত কঠোর বিধানের রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে, সরকারি সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রীয় সরকার বিলের বিধানগুলি মেনে চলা থেকে ছাড় দিতে পারে। এই পরিস্থিতিগুলি সাধারণত নির্দিষ্ট ভিত্তিতে আবর্তিত হয়, যেমন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষা করা, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং অপরাধ প্রতিরোধ করা।
এই বিলে বলা হয়েছে, বোর্ড যদি তদন্তের পর জানায় যে কোন ব্যক্তি বা কোনও সংস্থা ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষা আইনের বিধি লঙ্ঘন করেছে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রথমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর, মোটা অঙ্কের আর্থিক জরিমানা আরোপ করা হবে। যা সর্বাধিক ২৫০ কোটি টাকা।
এই বিলটি অনলাইন এবং ডিজিটাইজড অফলাইন ডেটা সহ ভারতে ডিজিটাল ব্যক্তিগত ডেটা প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এটি ভারতীয় পণ্য বা পরিষেবা প্রদানের জন্য ভারতের বাইরে পর্যন্ত প্রসারিত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন