জাতীয় রাজধানী দিল্লির পর বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা। HEI SoGA প্রকাশিত সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাতাসে উপস্থিত PM 2.5 এবং নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছে রিপোর্টটি।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতের দুটি প্রধান শহরের এই তালিকায় স্থান পাওয়ার প্রধান কারণই হল জনসংখ্যা বৃদ্ধি। দূষণের তালিকায় স্থান পাওয়া ভারতের আরও একটি অন্যতম শহর হল বাণিজ্যনগরী মুম্বাই। যা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ২০টি শহরের মধ্যে ১৪তম স্থানে রয়েছে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং কর্মীদের মতে, জনসংখ্যা ছাড়াও কলকাতায় উচ্চ হারে বায়ু দূষণের পিছনে অন্যান্য কারণ রয়েছে। যার মধ্যে সর্বাগ্রে রয়েছে অটোমোবাইল জ্বালানি নির্গমন, দূষণের ক্ষেত্রে যার ৬০ শতাংশ ভূমিকা রয়েছে।
সম্প্রতি, কলকাতা প্রেস ক্লাব সাংবাদিকদের জন্য 'এয়ার কোয়ালিটি লিডারশিপ' বিষয়ক একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বোস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরিবেশ বিজ্ঞানী দীপাঞ্জলি মজুমদার এবং পরিবেশ কর্মী বিনয় জাজুর মতো পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা।
মজুমদার এবং জাজু উভয়েই স্বীকার করেছেন, জনঘনত্বের পাশাপাশি অটোমোবাইল জ্বালানী নির্গমন উচ্চহারে শহরের বায়ু দূষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কারণ। এছাড়াও বেশকিছু মানবসৃষ্ট কারণ রয়েছে - যেমন, অসংখ্য খাবার বিক্রেতারা রাস্তার ধারে কয়লা বা কেরোসিনের চুল্লিতে খোলা অবস্থায় রান্না করে, যা দূষণকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
পরিবেশ কর্মী সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ সংবাদসংস্থা IANS-কে জানান, কয়লা এবং কেরোসিন ওভেনগুলিকে বৈদ্যুতিক ইন্ডাকশন কুকার দিয়ে প্রতিস্থাপন করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী এই কুকারগুলির বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু, শহরের ১০ হাজার খাবার বিক্রেতাদের মধ্যে প্রায় ১,৫০০ জনকে এই জাতীয় গ্যাজেট সরবরাহ করার পরেই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যায়।
অটোমোবাইল নির্গমনের বিষয়ে ঘোষের দাবি, একমাত্র বিকল্প হল ডিজেল চালিত বাণিজ্যিক এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট যানগুলিকে সিএনজি বা বৈদ্যুতিক যানবাহনের সাথে দ্রুত প্রতিস্থাপন করা। এই বিষয়ে তিনি বলেন, "ডিজেলচালিত পণ্যবাহী যানবাহনের ক্ষেত্রেও, যতদূর সম্ভব সেগুলোকে শহরের সীমানার বাইরে রাখতে হবে। এতে বায়ু দূষণকারী পদার্থের নির্গমন অনেকাংশে কমে যাবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন