দেশজুড়ে করোনা মহামারীর মাঝে আকাল দেখা দিয়েছে হাসপাতালের বেড, অক্সিজেন নিয়ে। টিকারও পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। তৃতীয় পর্বের অর্থাৎ ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মত টিকা সব রাজ্য পায়নি। ফলে কবে ভ্যাকসিন মিলবে, তা নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জরুরি ওষুধের ক্ষেত্রে কালোবাজারিও চলছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে ডিসিজিআই অনুমোদিত ডিআরডিও তৈরি করা ওষুধ।
জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া। আগামী সপ্তাহ থেকেই বাজারে মিলবে ওষুধটি। গত সপ্তাহেই ছাড়পত্র মিলেছিল। তার এক সপ্তাহের মধ্যে ড্রাগ ২ ডিঅক্সি ডি গ্লুকোজ বা সংক্ষেপে 2DG বাজারে আনার কথা ঘোষণা করল ডিআরডিও। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এই ওষুধের ট্রায়াল শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় দু’ধাপে এবং তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালও হয় দু’ভাগে।
ডিআরডিও'র দাবি, গতবছরের ডিসেম্বর থেকে গত মার্চ মাসের মধ্যে দু'শোরও বেশি কোভিড রোগীর ওপর এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। তাতে সাফল্য আসাতেই জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া হল। এর আগে রেমডেসিভির, ভিরাফিনকেও একইভাবে ডিসিজিআই জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যবহারে অনুমোদন দেয়। এই মুহূর্তে করোনা চিকিৎসায় সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় উপকরণ অক্সিজেনের বড়সড় সংকট। এই ওষুধ সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে বলে দাবি করব হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ওষুধ আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কাজে আসবে বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমহলের একাংশ।
ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালিড সায়েন্স (INMAS) এবং হায়দরাবাদের ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবের সহায়তায় ডিআরডিও’র গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে এই ওষুধ। গত শনিবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে সংস্থা থেকে জানানো হয়, এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গিয়েছে, রোগীর শরীরে অক্সিজেন নির্ভরতা কমাতে পারে। সহজে, ব্যাপক হারে উৎপাদনও করা যায়। করোনা রোগীর ওপর তা প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, দ্রুতই তাঁদের রিপোর্ট কোভিড নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছে। গ্লুকোজের অণু এই ওষুধের প্রধান উপকরণ।
ওষুধে ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে সংস্থার পক্ষ থেকে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, করোনার চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহেই 2DG ওষুধের প্রথম ব্যাচটি বাজারে আসতে চলেছে। ইউ ব্যাচে থাকবে দশ হাজার ডোজ। তারপরই করোনা রোগীদের জন্য ব্যবহার করা হবে।ওষুধটি তৈরির দায়িত্বে আছেন ডঃ অনন্ত নারায়ন ভাট-সহ ডিআরডিও একদল বৈজ্ঞানিক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন