সর্ষের মধ্যে ভূত কি অবশেষে ধরা পড়ে গেল? পেগাসাস ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত কমিটিকে দুই সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ যে বয়ান দিয়েছেন, তাতে এই দুর্নীতিতে বিস্ফোরক কিছু তথ্য সামনে চলে এল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তদন্ত কমিটি রিপোর্ট না দিলেও সর্বভারতীয় একটি সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, ফোনে আড়ি পাততে যে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা হয়, তার সুস্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। আর একথা সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন ওই দুই সাইবার নিরাপত্তা গবেষক।
এক সাইবার গবেষক হলফনামার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগকারী যে সাতজনের আইফোন খতিয়ে দেখেছেন, তার মধ্যে দু’টি ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর প্রমাণ মিলেছে। গবেষকরা ফরেন্সিক গবেষণার তথ্য ওই কমিটিকে দিয়েছেন। ওই গবেষকের বক্তব্য, একটি ফোনে পেগাসাসের মাধ্যমে আড়ি পাতা হয় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে। দ্বিতীয়টিতে ২০২১ সালের জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে বেশ কয়েকবার আড়ি পাতা হয়েছে।
দ্বিতীয় সাইবার নিরাপত্তা গবেষক ছ’জন আবেদনকারীর অ্যান্ড্রয়েড ফোন দেখে দাবি করেছেন, ছ’টির মধ্যে চারটিতে আড়ি পাতা হয়েছে পেগাসাসের বিভিন্ন ভার্সানের মাধ্যমে। বাকি দু’টি ফোনে পেগাসাসের অরিজিনাল ভার্সানের মাধ্যমে নজরদারি চলে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে ওই গবেষক বলেন, ‘এই স্পাইওয়্যারটির মাধ্যমে ব্যক্তিগত কথোপকথন পড়ে ফেলা যাও। যে কোনও সময় ফোনের অডিও বা ভিডিওতে আড়ি পাতা যায়।’
তদন্ত কমিটি গত ২ জানুয়ারি সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে বলে, পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারি চলেছে বলে সন্দেহ থাকলে ৭ জানুয়ারির মধ্যে কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। ফরেন্সিক পরীক্ষার অভিযোগকারীদের ফোন জমা রাখা হবে বলে আবেদন করেছিল তদন্ত কমিটি। তাদের বক্তব্য ছিল, পরীক্ষার পর ফোন ফিরিয়ে দেওয়া হবে। যদিও কয়েকজন আবেদনকারী এই প্রক্রিয়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এই বিষয়টি নিয়েও দুই সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ কথা বলেন। তাঁদের বক্তব্য, ফোন জমা রাখার প্রয়োজন হয় না। শুধু ফোনের ‘ইমেজ’ কপি করে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। তা দিয়েই ফরেন্সিক পরীক্ষা করা যায়। এদিকে, তদন্ত কবে শেষ হবে, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল। যদিও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন