তীব্র দাবদহের জেরে ভারতে প্রাণহানির ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। তবে, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে দাবদাহ (Heat Wave) প্রধান দেশের তালিকায় জায়গা করে নিতে পারে ভারত (India)। আগামীতে ভারতের আবহাওয়া সাধারণ মানুষের সহ্যসীমার বাইরে চলে যেতে পারে। সম্প্রতি, এক রিপোর্টে এমনই দাবি করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক (World Bank)।
‘ক্লাইমেট ইনভেসমেন্ট অপারচুনেটিস ইন ইন্ডিয়াস কুলিং সেক্টর’ শিরোনামে বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে স্বাভাবিকের তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে গ্রীষ্মকাল। তার ফলেই তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকবছরে শুধু দাবদাহের কারণেই ভারতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্ট যথেষ্ট উদ্বেগজনক।
কী বলা হয়েছে বিশ্ব ব্যাংকের রিপোর্টে? ২০২২ সালে ভারতের তাপমাত্রা বিচার করে বলা হয়েছে, ‘২০২২ সালের এপ্রিল মাসেই মাত্রাছাড়া গরম পড়েছিল ভারতের অধিকাংশ শহরে। দেশের রাজধানী দিল্লির (Delhi) তাপমাত্রা ছিল ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। মার্চ মাসেও রেকর্ড পরিমান তাপপ্রবাহ ছিল ভারতের নানা প্রান্তে।’
আর, তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণা করে বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এইভাবে চলতে থাকলে তাপপ্রবাহের তীব্রতা মানুষের সহ্যসীমার বাইরে চলে যাবে।
এদিকে, জানা যাচ্ছে- কেরালা সরকারের সাথে অংশীদারিত্বে, বিশ্ব ব্যাংক আয়োজিত দুই দিনের 'ইন্ডিয়া ক্লাইমেট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনারস মিট'-এর সময় এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হবে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ভারতের গড় তাপমাত্রা যা ছিল, আগামী দশ বছরের মধ্যে তা ২৫ গুণ বেড়ে যাবে। প্রতি বছর কমপক্ষে এগারো দিন তাপপ্রবাহ হতে পারে। শুধু গরমই নয়, ভোগান্তি বাড়াবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের সমস্যাও। তার অন্যতম প্রধান কারণ কার্বন নিঃসরণ। দূষণ ও কার্বন নির্গমনের পরিমাণ যদি না কমানো যায়, তাহলে সাংঘাতিক তাপপ্রবাহের মধ্যে পড়তে হবে ভারতকে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, 'ভারতের শ্রমশক্তির ৭৫ শতাংশ অর্থাৎ ৩৮০ মিলিয়ন মানুষ উন্মুক্ত জায়গায়, তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে কাজ করে থাকেন। কখনও কখনও, তাঁদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০ মিলিয়ন কর্ম দিবসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তীব্র তাপপ্রবাহের জেরে তা থেকে ৩৪ মিলিয়ন হ্রাস পেতে পারে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন