শুক্রবার থেকে বার বার ভয়াবহ ভূকম্পে কেঁপে উঠেছে আইসল্যান্ড। প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে ১৪ ঘন্টায় ৮০০ বার ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে সেখানে। আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সতর্কতা জারির পাশাপাশি জরুরী অবস্থা জারি করেছে সে দেশের সরকার।
আইসল্যান্ডের রেকজেন্স মালভূমি এলাকা এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। প্রশাসনিক আধিকারিকরা জানান, "গ্রিন্ডাভিকের উত্তরে সুন্ধনজুকাগিগার একাধিকবার কেঁপে উঠেছে। রিখটার স্কেলে সর্বোচ্চ কম্পন অনুভূত হয়েছিল ৫.২। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এই ধরণের কম্পন তখনই হয় যখন কোনো আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা থাকে। স্বাভাবিকভাবে অনুমান হচ্ছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই অঞ্চলে আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা বেরিয়ে আসবে।"
এই গ্রিন্ডাভিক গ্রামে প্রায় ৪০০০ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে এই এলাকা ৩ কিমি দূরে অবস্থিত। প্রশাসনের তরফ থেকে ওই অঞ্চলের সমস্ত মানুষকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাঁদেরকে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে রাখা হবে।
আবহাওয়াবিদরা আরও জানান, রেকজেন্স মালভূমি এলাকায় ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে ম্যাগমা সঞ্চিত হচ্ছে। সেই ম্যাগমা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে উঠতে থাকলে আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে ভূপৃষ্ঠের উপরে ম্যাগমা আসতে বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।
তাঁরা আরও বলেন, ভূমিকম্পের ফলে যেখানে যেখানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই ফাটলগুলি দিয়ে লাভা বেরিয়ে আসতে পারে। মূলত দক্ষিণ-পূর্ব ও পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। গ্রিন্ডাভিকের দিকে লাভার প্রভাব তেমন পড়বে না।
প্রসঙ্গত, গত মাস থেকে এখনও পর্যন্ত ওই অঞ্চলের কম্পনের পরিসংখ্যান দেখলে সকলের মনেই আতঙ্কের সৃষ্টি হবে। দক্ষিণ-পশ্চিমে রেকজেন্স মালভূমিতে অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৪ হাজার বার কম্পন অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার থেকে সেই কম্পনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, আইসল্যান্ডে প্রকৃতির এই ধরণের 'খামখেয়ালিপনা' নতুন নয়। এর আগে ২০১০ সালে একটি আগ্নেয়গিরি থেকে ভয়ঙ্কর অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। যার জেরে ১ লক্ষ ফ্লাইট বাতিল করতে হয়েছিল এবং ১ কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন