শীতের আমেজ ঠিকমতো পড়তে না পড়তেই দূষণ দৈত্যের দাপট মহানগরে। তাপমাত্রার পারদ নামার আগেই অন্যান্য বছরের মত এবারও মহানগরের বুকে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে শুরু করেছে বায়ুদূষণ। বাদ যাচ্ছে না রবিবার এবং অন্যান্য ছুটির দিনগুলিও। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে আসায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসক, গবেষক এবং পরিবেশবিদদের কপালে।
ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত রবিবার দূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি ছিল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এলাকায়। সেখানে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত একিউআই (Air Quality Index) সূচক পৌঁছে যায় ৩২৮-এ। উত্তর কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সর্বোচ্চ একিউআই ২৯১ এবং দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুরে একিউআই ৩১৩। অন্যদিকে, সল্টলেকে দূর্ষণ বেড়েছে অনেক বেশি, একিউআই সূচকে ৩০২।
পরিসংখ্যানের রিপোর্টে বলছে, চলতি বছর দীপাবলির রাতে মহানগরে যে পরিমাণ দূষণ ছিল, ডিসেম্বরের প্রথম রবিবার তা ছাপিয়ে গেছে। এই ঘটনা মহানগরের বুকে প্রথম। শীতের আমেজ উপভোগ করতে গত রবিবার থেকেই পিকনিক স্পট, কলকাতার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলিতে ভীড় জমতে শুরু করেছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বায়ু দূষণ। যার ফলে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পরিবেশবিদরা।
ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের পরিসংখ্যানে আরও জানা গেছে, রবিবার শহরের দূষণ সূচক ছিল ৩০১ থেকে ৪০০ এআইকিউ-র মধ্যে। অন্যান্য বায়ু দূষকের পাশাপাশি বাতাসে ভাসমান সূক্ষ ধূলিকণার পরিমাণ বাড়ায় তা সমস্যার কারণ হতে পারে বলে অনুমান চিকিৎসকদের।
চিকিৎসক অপূর্ব ব্যানার্জীর কথায়, এই পরিস্থিতিতে বয়স্ক মানুষ এবং শিশুদের অসুস্থতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাই এই সময়ে প্রাতঃভ্রমণে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে কলকাতায় বায়ুদূষণ বাড়ার সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিল বসু বিজ্ঞান মন্দিরের গবেষকরা। তাঁদের মতে, ২০১৯ সালের তুলনায় এই বছর বায়ুদূষণের পরিমাণ ৮% বৃদ্ধি পেতে পারে। গত ২ বছর করোনা অতিমারীর কারণে অন্যান্য শহরের পাশাপাশি কলকাতায় দূষণের পরিমাণ ছিল অনেক কম।
তাঁরা আরও জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে রাজ্যে এরোসল দূষণ ৮% বাড়বে। তার ফলে দূষণের মানচিত্রে রেড জোনে ঢুকে পড়বে পশ্চিমবঙ্গ। সেক্ষেত্রে বিহারের পরেই স্থান হবে এ রাজ্যের। যার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতে হবে কলকাতাবাসীকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন