ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের ঘটনায় বিশ্বের সমস্ত দেশকে ছাপিয়ে শীর্ষে ভারত। সম্প্রতি প্রকাশিত এক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই তথ্য। রিপোর্টে অনুযায়ী, গত ১০ বছরে ভারতে সরকারের পক্ষ থেকে ৭৮০ বার নেট পরিষেবা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২০-র মধ্যে সব থেকে বেশি বার নেটবন্দির ঘটনা ঘটে বলেই জানা গেছে ওই প্রকাশিত রিপোর্টে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই নেটবন্দির ফলে প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। গত পাঁচ বছরে এই নেটবন্দির জেরে ক্ষতি হয়েছে ৪৫,৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া সরকারের তরফে অন্তত ৬০,০০০টি ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এই কারণে হওয়া মোট ক্ষতির ৭০ শতাংশ ক্ষতিই হয়েছে ভারতের জন্যই। ২০২৩ সালের হিসাবে, সামগ্রিকভাবে দেশজুড়ে অন্তত ৭০০০ ঘণ্টা বা প্রায় দশ মাস বন্ধ থেকেছে নেট পরিষেবা বিভিন্ন স্থানে। এর জেরে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৬ কোটি মানুষের।
এছাড়াও সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৪-এ বছরে মোটে ৬ বার নেটবন্দির ঘটনা ঘটে, সেখানে ২০২৩-এ তা বেড়ে হয়েছে ৯৬ বারে। নেটবন্দিতে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে কাশ্মীর। গত ১২ বছরে মোট ৪৩৩ বার নেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কাশ্মীরে। ২০১৯-এ ৩৭০ ধারা বাতিল করার পর মোট ৫৫২ দিন ধরে ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ ছিল কাশ্মীর উপত্যকার পুলওয়ামা, শ্রীনগর ও সোপিয়ান সহ অন্যান্য জেলায়।
তবে ২০২৩ সালে সবথেকে বেশি ইন্টানেট বন্ধ হয়েছে মণিপুরে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কৃষক আন্দোলনের জেরে নেট বন্ধ ছিল দিল্লি সীমান্তের বেশ কিছু জায়গা এবং হরিয়ানার বেশ কিছু জায়গায়।
সাধারণ বোঝাপড়ায় ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আটকাতে, বা সাম্প্রদায়িক হিংসার আবহাওয়া ঠান্ডা করতেই নির্দিষ্ট অঞ্চলে কিছু সময়ের জন্য নেট পরিষেবা বন্ধ করতে পারে সরকার। পুরোপুরি বন্ধ না করেও আংশিকভাবে নেটওয়ার্কের গতি কমিয়ে দিয়েও এই কাজ করা যায়।
অন্যদিকে, ২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অন্তত ৬০,০০০ ওয়েবসাইট বন্ধ হয়েছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত একাধিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি অত্যাচার সহ একাধিক খবর, বিবৃতি, ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে টুইটার সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এমন ৩০,০০০টি পোস্ট মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনটাই জানিয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি দপ্তরের মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন