বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি গবেষণায় অনন্য অবদান রাখার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার চল ছিল আমাদের দেশে। তবে মোদী সরকারের আমলে কোপ পড়ল এই পুরস্কারের উপর। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণায় লাগাতার আর্থিক বরাদ্দ কমানোর পাশাপাশি এবার দেশের সেরার সেরা বিজ্ঞান পুরস্কারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হল একাধিক পুরস্কার। তার বদলে 'ভারতরত্ন' সম্মাননার ধাঁচে ‘বিজ্ঞানরত্ন’ পুরস্কার চালু করতে চাইছে কেন্দ্র।
সূত্রের খবর, গত ১৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লার সভাপতিত্বে একটি বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা গত ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি নোটিশ আকারে প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের নবীন বিজ্ঞানীদের জন্য দেওয়া অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কারের মাসিক অনুদান বাতিল করা হচ্ছে। ১০০ টি জাতীয় পুরস্কার বাতিলের কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একাধিক কেন্দ্রীয় ফেলোশিপ ও সরকারের তরফে দেওয়া পুরস্কারস্বরূপ ব্যক্তিগত অনুদান বাতিল করা হচ্ছে এই বছর থেকে। কেবলমাত্র বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগে সংস্থাভিত্তিক মেধা পুরস্কার দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক সূত্রের খবর, তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিভাগের ২১১টি পুরস্কারের মধ্যে ২০৭টি বন্ধ করা হবে। পরমাণু শক্তি বিভাগের ৩৮টি পুরস্কারের সবগুলি বাতিল করা হবে। এছাড়াও, মহাকাশ বিজ্ঞান বিভাগেরও তিনটি পুরস্কারই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি, বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা বিভাগের সাতটি পুরস্কারের মধ্যে ছ’টি এবং ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের চারটি পুরস্কারের মধ্যে তিনটিকে বাতিলের তালিকায় পাঠানো হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, ভাটনগর পুরস্কৃত বিজ্ঞানীদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার সময়সীমা বেধে দেওয়া হল ১৫ বছর পর্যন্ত। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিজ্ঞানের একই ক্ষেত্রে গবেষণার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রক ও বিভাগের পৃথক পৃথক পুরস্কার চালু রয়েছে। সে কারণেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তবে কেন্দ্রের এই যুক্তি মানতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিজ্ঞান এবং গবেষণার ক্ষেত্রে আগ্রহ কমতে পারে নতুন প্রজন্মের। এমনটাই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন