প্রয়াত ভারতের সবুজ বিপ্লবের জনক এম এস স্বামীনাথন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
পরিবার সূত্রে খবর, তেনাম্পেতে নিজের বাসভবনেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এম এস স্বামীনাথন রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (MSSRF) প্রতিষ্ঠাতা।
তাঁর মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা কার্যত ভেঙে পড়েছেন। তিন কন্যা সৌমিয়া স্বামীনাথন, যিনি MSSRF-র বর্তমান চেয়ারপার্সন, মধুরা স্বামীনাথন (ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউটের ইকোনমিক্সের অধ্যাপক) এবং নিত্যা স্বামীনাথন (ইস্ট অ্যাংলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন লেকচারার)-র সাথে থাকতেন তিনি। বাবার প্রয়াণে তিন কন্যাই মর্মাহত।
ভারতের কৃষিতে উন্নতির জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন স্বামীনাথন। ভারতীয় কৃষিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার, উচ্চ ফলনশীল বীজের ব্যবহার, উপযুক্ত সেচ পরিকাঠামো, কীটনাশকের ব্যবহার সহ একাধিক দাবি নিয়ে বিখ্যাত মার্কিন কৃষিবিদ নরম্যান বোরলগের সহযোগিতায় বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ওই বিপ্লবকেই সবুজ বিপ্লব বলা হয়। যার প্রভাব সব থেকে বেশি পড়েছিল পাঞ্জাব এবং হরিয়ানায়।
১৯৪৯ সালে কৃষিতে আলু, গম, ধান এবং পাট নিয়ে গবেষণা শুরু করেন স্বামীনাথন। ভারতের মতো বৃহৎ জনসংখ্যার দেশে খাদ্য চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কৃষিক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনেন।
সবুজ বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ১৯৭৯ সালে কৃষিমন্ত্রকের মুখ্যসচিব হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। আবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ অ্যাগ্রিকালচারাল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল পদেও ছিলেন। ১৯৮৮ সালে 'ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ কনজারভেশন অফ নেচার অ্যান্ড ন্যাচারাল রিসোর্সে'র সভাপতি পদেও কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।
নিজের কাজের জন্য একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৬১ সালে তাঁকে দেওয়া হয় শান্তি স্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার। ভারত সরকার ১৯৬৭ সালে পদ্মশ্রী, ১৯৭২ সালে পদ্মভূষণ এবং ১৯৮৯ সালে পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত করে। এছাড়াও ১৯৮৭ সালে তিনি প্রথম বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (World Food Prize) পেয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে পেয়েছিলেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন অ্যাওয়ার্ড।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন