করোনিলকে কোভিড-১৯ কিটে অন্তর্ভুক্তি করার যে দাবি রামদেবের পতঞ্জলি করেছে তার তীব্র বিরোধিতা করলো আইএমএ। উত্তরাখণ্ড সরকারকে লিখিত এক চিঠিতে এই প্রতিবাদ জানিয়েছে আইএমএ উত্তরাখণ্ড।
উত্তরাখণ্ড সরকারকে লেখা চিঠিতে আইএমএ জানিয়েছে – করোনিল কোনো ওষুধ নয়। রামদেবের করোনিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বীকৃত নয়। এই ট্যাবলেট কেন্দ্রীয় কোভিড গাইডলাইনের অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই কোনোভাবেই এই ট্যাবলেট উত্তরাখণ্ড কোভিড কিট-এর অন্তর্ভুক্ত করা যাবেনা।
আইএমএ উত্তরাখণ্ডের সম্পাদক ডাঃ অজয় খান্না তাঁর লিখিত চিঠিতে আরও জানিয়েছেন – রামদেব বা পতঞ্জলি যাই দাবি করুক, করোনিল কোনো ওষুধ নয়। কেন্দ্রীয় সরকার করোনিলকে শুধুমাত্র ‘ফুড সাপ্লিমেন্ট’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আইএমএ-র আরও জানিয়েছে, অ্যালোপ্যাথি ওষুধের সঙ্গে এভাবে আয়ুর্বেদিক উপাদান মিশিয়ে দিয়ে চিকিৎসা করা আইনস্বীকৃত নয়। এই বিষয়ে বিভিন্ন হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারি আছে।
দেশের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের ধারা ৩৪ উল্লেখ করে আইএমএ উত্তরাখণ্ড জানিয়েছে যে কোনো রকমের মিক্সোপ্যাথি নিষিদ্ধ। পতঞ্জলির করোনিল এই ধারা লঙ্ঘন করছে। বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে রামদেব যেভাবে করোনিলকে ওষুধ বলে দাবি করছেন তাও সঠিক নয় বলে দাবি আইএমএ উত্তরাখণ্ডের।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন থেকেই রামদেবের সঙ্গে বিতর্ক চলছে আইএমএ-র। বিতর্কের সূত্রপাত যোগগুরু রামদেবের একটি ভিডিও থেকে যেখানে তাঁকে অ্যালোপ্যাথি ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা যায়। রামদেব বলেন, অ্যালোপ্যাথি একটি স্টুপিড সায়েন্স। DCGI অনুমোদিত রেমডেসিভির, ফ্যাভি ফ্লু এবং অন্যান্য ওষুধগুলো করোনা রোগীদের সুস্থ করে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খেয়ে লক্ষ লক্ষ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আধুনিক চিকিৎসকরা খুনি।
রামদেবের এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে দেশের চিকিৎসক মহলে। মহামারী আইনে রামদেবের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার দাবিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধনকে চিঠি লেখে শীর্ষ মেডিক্যাল সংস্থা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ। ১৫ দিনের মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে যোগগুরুর বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করে সংস্থাটি।
রামদেবের এই মন্তব্যের প্রতিবাদে গত ১ জুন দেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবস পালন করেন চিকিৎসকরা।
এর আগে গত বছরের ২৪ জুন পতঞ্জলির তৈরি কোভিড ওষুধের প্রচার বা বিজ্ঞাপন বন্ধ করার নির্দেশ জারি হয়েছিলো কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকের পক্ষে। আয়ুষ মন্ত্রকের অভিযোগ ছিলো, এই ওষুধের বিস্তারিত তথ্য নেই, কী উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তাও জানা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত না এই তথ্যগুলো জানা যাবে এবং ওষুধটি যথাযথভাবে পরীক্ষা করা না হবে, ততদিন এই ওষুধের প্রচার বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছিলো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন