টোঙ্গা নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বিশ্ববাসীর। গত ১৫ জানুয়ারির অগ্ন্যুৎপাতের পর এখনও পর্যন্ত এই দ্বীপরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। ফলত টোঙ্গায় বসবাসকারী নিকটজনদের খবর পেতে উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন অনেকেই। ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে আরও অগ্ন্যুৎপাত এবং তার প্রভাবে সুনামি সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। আশংকা করা হচ্ছে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ এবং সুনামিতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে টোঙ্গা এবং সংলগ্ন অঞ্চলের।
ইউ এস জিওলজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) এক আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে জানিয়েছেন ওই অঞ্চলে আরও অগ্ন্যুৎপাত এবং তার প্রভাবে সুনামি হতে পারে। উল্লেখ্য, শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫.২৬ মিনিট নাগাদ আচমকাই সমুদ্রের নীচে থাকা এই আগ্নেয়গিরিতে বিস্ফোরণ ঘটে। টোঙ্গার ফোনুয়াফাউ দ্বীপের ৩০ দক্ষিণ পূর্বে সমুদ্রের নীচে দ্য হুঙ্গা টোঙ্গা হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরি। গত শুক্রবার এখানে প্রথম অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।
ইউএসজিএস ভলকানো হ্যাজার্ডস প্রোগ্রাম (ভিএইচপি) এর আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি স্টোভাল সোমবার স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন যে অগ্ন্যুৎপাতটি অবিশ্বাস্য ছিল এবং সমুদ্রের নিচের আগ্নেয়গিরি হবার কারণে এর আগাম সতর্কতা জারি করা কঠিন। একথা জানিয়েছে সংবাদসংস্থা জিংহুয়া।
তিনি আরও জানিয়েছেন, "সম্ভবত সমুদ্রের নীচে কোনো ভূমিকম্প থেকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ম্যাগমা উন্মোচিত হয়েছিল এবং যা প্রবল বেগে ভয়ংকর ভাবে জলের নীচ থেকে বেরিয়ে এসেছিলো।
ওরেগনের এক সংবাদমাধ্যমে স্টোভাল জানিয়েছেন, "আমরা বিষয়গুলির উপর নজর রাখছি এবং যখনই এই বিষয়ে পরবর্তী তথ্য পাওয়া যাবে তা আমরা জানাবো। ওই অঞ্চলে আরও বড়ো ধরণের অগ্ন্যুৎপাতের এবং সুনামির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায়না। আবার এই আগ্নেয়গিরি আবার ঘুমিয়ে পড়তে পারে। যা এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, "টোঙ্গায় যে অভিজ্ঞতা ঘটেছে তা প্রমাণ করে যে জলের নীচে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছিলো এবং যে কোনো সময় সেখানে আগ্নেয়গিরি থেকে আরও বড় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। যার ফলে বড় আকারের ঢেউ উঠতে পারে এবং অনুরূপ স্ট্রাটোস্ফিয়ারিক ধরণের অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে।"
স্টোভাল জানিয়েছেন, শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাতের পরে কখনও কখনও কয়েক বছরের জন্য কোনো আগ্নেয়গিরি পুরো ঘুমিয়ে থাকতে পারে। যদিও উল্লেখ্য যে এখনও পর্যন্ত আমাদের সহকর্মীরা টোঙ্গা থেকে যে তথ্য পেয়েছে তার ভিত্তিতে এটা বলা সম্ভব নয় যে এখানে এখনই আর কোনো অগ্ন্যুৎপাত হবেনা।
তিনি বলেন, টোঙ্গার কাছে এই আগ্নেয়গিরি সক্রিয় অবস্থাতেই আছে এবং গত ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ নাগাদ এখানে একটা ছোট অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল। যদিও সেই অগ্ন্যুৎপাত খুবই ছোটো আকারের ছিলো এবং তখন সুনামি সতর্কতা জারি করার প্রয়োজন হয়নি।
- with Agency Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন