পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে হোয়াটস অ্যাপ-এর অপব্যবহার করে যেসব রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীরা স্বয়ংক্রিয় বাল্ক মেসেজের মাধ্যমে বিভিন্ন বার্তা পাঠাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলেছে হোয়াটস অ্যাপ। সোমবার মেটা-মালিকানাধীন হোয়াটসঅ্যাপ-এর পক্ষ থেকে একথা জানানো হয়েছে।
গতকাল প্রকাশিত আইএএনএস-এর প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় জনপ্রিয় মেসেজিং সংস্থাটি জানিয়েছে, ব্যবহারকারীদের অনলাইন নিরাপত্তার পাশাপাশি নির্বাচনের অখণ্ডতা রক্ষার বিষয়ে সংস্থা গভীরভাবে যত্নশীল। গতকালের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিলো বাল্ক হোয়াটসঅ্যাপ এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস) সরঞ্জামগুলি সেকেন্ডের ভগ্নাংশে মেসেজ পিছু মাত্র 8 থেকে 10 পয়সা খরচ করে কীভাবে দল এবং প্রার্থীরা ভোটারদের হোয়াটসঅ্যাপে রাজনৈতিক বার্তা পাঠাচ্ছে।
কোম্পানীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, "স্প্যাম শনাক্তকরণে হোয়াটসঅ্যাপের উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। যা স্বয়ংক্রিয় এবং বাল্ক মেসেজিংয়ে জড়িত অ্যাকাউন্টগুলিকে চিহ্নিত করতে এবং পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চব্বিশ ঘন্টা কাজ করে। যেখানে হোয়াটসঅ্যাপের পরিষেবার শর্তাবলী লঙ্ঘনের জন্য এই জাতীয় অ্যাকাউন্টগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়ে থাকে।"
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে, এই মেসেজিং সংস্থা জানিয়েছিলো, যারা স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মাধ্যমে বাল্ক মেসেজ পাঠিয়ে প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহারে জড়িত বা অন্যদের সহায়তা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় বাল্ক মেসেজিং আবার চালু হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ নির্বাচনমুখী রাজ্যের ক্ষেত্রে এর বেশি ব্যবহার হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের হয়ে বেশ কিছু সংস্থা হোয়াটসঅ্যাপ-এর নীতি ও শর্তাবলী লঙ্ঘন করে এই জাতীয় বাল্ক মেসেজ পাঠাচ্ছেন।
হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, "শিক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবহারকারীদের তথ্য যাচাই করতে সহায়তা করে এমন মাধ্যমগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সংস্থা।"
হোয়াটস অ্যাপের মুখপাত্র আইএএনএস-কে জানিয়েছেন, "'ফরোয়ার্ড'-এর উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ফলে হোয়াটসঅ্যাপে 'অত্যধিক ফরোয়ার্ড করা মেসেজ'-এর বিস্তার ৭০ শতাংশের বেশি কমেছে। প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়ভাবে ভাইরালিটি সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। আমরা সবসময় ব্যবহারকারীদের সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট ব্লক করতে এবং রিপোর্ট করতে উৎসাহিত করি। যদি তারা কোনো নাম্বার থেকে সমস্যাযুক্ত বার্তা পায় সেক্ষেত্রে এই রিপোর্ট করা যেতে পারে।”
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, তারা ১০টি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার সাথে কাজ করছে, যারা হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় এবং আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক দ্বারা স্বীকৃত৷
দেশে এই মুহূর্তে ৪০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। থার্ড-পার্টি মার্কেট এবং কনজিউমার ডেটা প্ল্যাটফর্ম স্ট্যাটিস্টা দাবি করেছে, এই মুহূর্তে দেশে হোয়াটস অ্যাপ-এর সঙ্গে যুক্ত ৪৮৭ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী।
প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া এবং মণিপুরের বিধানসভা নির্বাচন সাতটি ধাপে সম্পন্ন হবে এবং উত্তরপ্রদেশ প্রথম দফায় ভোট নেওয়া হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। আগামী ১০ মার্চ পাঁচ রাজ্যের ভোট গণনা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন