প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা প্রকল্পের আওতায় খোলা অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে প্রায় ১০.৩৬ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শেষ অর্থবর্ষে কোনও লেনদেনই হয়নি। সম্প্রতি এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বমের করা প্রশ্নের উত্তরে এই তথ্য প্রকাশ করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত কারাড।
কারাড জানিয়েছেন, বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির তথ্য অনুযায়ী ৩১ মার্চ ২০২২ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার আওতায় খোলা ১০.৩৬ কোটি অ্যাকাউন্টে ২০২২-২৩ অর্থবছরে কোনওরকম আর্থিক লেনদেন হয়নি। বরং উল্টে ওই এক বছরে এই প্রকল্পে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রায় ৭৯৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে প্রান্তিক এবং আর্থ-সামাজিকভাবে অবহেলিত শ্রেণীকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে এই জন ধন যোজনা প্রকল্পটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল প্রতিটি ব্যাঙ্কবিহীন পরিবারের জন্য জিরো ব্যালেন্স ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে সর্বজনীন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা প্রদান করা।
আরটিআই আইনের অধীনে জানা গেছে অনেকেই এই প্রকল্পকে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছে। অর্থ পাচারের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বেশ কয়েকটি জন ধন অ্যাকাউন্ট। মানিলাইফের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া একটি জন ধন অ্যাকাউন্টে ৯৩.৮২ কোটি টাকা জমা পড়েছে। ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একটি অ্যাকাউন্টে ৩.০৫ কোটি টাকা জমা পড়েছে। ১.২১ কোটি টাকা জমা পড়ার কথা স্বীকার করেছে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া; ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র ৯৮.৪৫ লক্ষ টাকা এবং দেনা ব্যাঙ্ক ৯৪.৪৫ লক্ষ টাকা একক অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ জমা হিসাবে স্বীকার করেছে৷
সিপিআই সাংসদ বিশ্বমের আর্থিক সাক্ষরতা বিষয়ক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী কারাড আরও জানিয়েছেন, আর্থিক সাক্ষরতার জন্য বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির নেতৃত্বাধীন উদ্ভাবনী ও অংশগ্রহণমূলক পন্থা অবলম্বনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে সেন্টার ফর ফিনান্সিয়াল লিটারেসি (সিএফএল) নামক পাইলট প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। সারা দেশে ৩০ জুন ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৬২১টি সিএফএল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
সরকারের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ২০১৯ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনা বিষয়ক বীমা আদায়ের সঙ্গে যুক্ত ২৪১৬টি রুপে কার্ডকে (Rupay card) নিষ্পত্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি, এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে ১২ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত দেশে ৪৯.৪৯ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২,০০,৯৫৮ কোটি টাকা তোলা হয়েছে। অন্যদিকে চলতি বছরের মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় সরকার আরও দাবি করেছিল, ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জন ধন যোজনার আওতায় প্রায় ৩৭.৮৭ কোটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে যার মধ্যে ৩০.৭৮ কোটি (৮১.৩ শতাংশ) অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন