দেশের ১০৭ জন বিধায়ক এবং সাংসদ ঘৃণাসূচক মন্তব্যের জেরে তাঁদের বিরুদ্ধে থাকা মামলার কথা জানিয়েছেন। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR) এবং ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচ (NEW)-এর যৌথ উদ্যোগে করা এক সমীক্ষা থেকে একথা জানা গেছে।
এডিআর জানিয়েছে বিগত ৫ বছরে রাজ্যসভা, লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এমন ৪৮০ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক মন্তব্যের অভিযোগ আছে।
রিপোর্ট অনুসারে, সমীক্ষা করা সাংসদ এবং বিধায়কদের মধ্যে যথাক্রমে ৩৩ জন এবং ৭৪ জন তাঁদের বিরুদ্ধে ঘৃণাত্মক বক্তৃতা সংক্রান্ত মামলার কথা জানিয়েছেন। সমীক্ষায় ৪,৭৬৮ জন সাংসদ এবং বিধায়কের দেওয়া হলফনামার তথ্য যাচাই করে এই সমীক্ষা করা হয়েছে।
এডিআর-এর সমীক্ষা অনুসারে যেসব সাংসদরা তাঁদের বিরুদ্ধে ঘৃণাসূচক মন্তব্যের কারণে মামলা আছে বলে জানিয়েছেন তার মধ্যে আছেন অমিত শাহ, প্রহ্লাদ জোশী, গিরিরাজ সিং, শোভা কারানলাজে, নিত্যানন্দ রাই, দিলীপ ঘোষ, প্রজ্ঞা ঠাকুর, নিশিকান্ত দুবে, অনন্তকুমার হেগড়ে, আসাদুদ্দিন ওয়েইসি, বদরুদ্দিন আজমল, শশী থারুর, কানিমোঝি, সঞ্জয় রাউথ, রাঘব চাড্ডা এবং ভাইকো।
রিপোর্ট অনুসারে এই ধরণের ঘটনার শীর্ষে আছে উত্তরপ্রদেশ। যে রাজ্য থেকে ১৬টি মামলার কথা জানা গেছে। এরপর এই তালিকায় ১২টি ঘটনা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে বিহার। তামিলনাড়ু এবং তেলেঙ্গানা থেকে ৯টি করে মামলার কথা জানা গেছে। এই তালিকায় মহারাষ্ট্রের ৮জন, আসামের ৭জন এবং অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট এবং পশ্চিমবঙ্গের ৬জন আইনপ্রণেতা রয়েছেন।
কর্ণাটক থেকে এই ধরনের ৫টি মামলার খবর পাওয়া গেলেও, দিল্লি এবং ঝাড়খণ্ডের পরিসংখ্যান অনুসারে ৪টি করে, পাঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডে ৩টি করে এবং মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, রাজস্থান এবং ত্রিপুরায় ২টি করে মামলার কথা জানা গেছে। কেরালায় ১টি ঘটনা ঘটেছে।
জাতীয় দলগুলির মধ্যে, বিজেপি সর্বাধিক ৪২ টিতে এই জাতীয় মামলার রিপোর্ট করেছে। এরপর কংগ্রেস ১৫টিতে, আম আদমি পার্টি ৭টিতে এবং সিপিআই-এম ১টি ঘটনার কথা জানিয়েছে।
আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি এবং ওয়াইএসআরসিপি-র বিরুদ্ধে ৫টি করে ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। আরজেডি-র বিরুদ্ধে ৪টি ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ-এর বিরুদ্ধে ২টি করে ঘটনার অভিযোগ আছে।
এই সমীক্ষার ভিত্তিতে এডিআরের দেওয়া পরামর্শ অনুসারে, রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের নির্দেশনার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত ১৯৫১ সালের আদর্শ আচরণবিধির ১২৩ ধারার (৩এ) উপধারা এর প্রভাবের পরিমাণে সংশোধন করা উচিত।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, “কোডের প্রথম অংশ অর্থাৎ সাধারণ আচরণে স্পষ্টভাবে এমন একটি নিয়ম করা উচিত যা ধর্ম, জাতি, বর্ণের ভিত্তিতে ভারতের নাগরিকদের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে শত্রুতা বা ঘৃণার অনুভূতি প্রচার করে, বা প্রচার করার চেষ্টা করে এমন কোনো ধরনের বক্তৃতা নিষিদ্ধ করে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন