চূড়ান্ত ব্যর্থতার মুখে মোদী সরকারের 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' প্রকল্প। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকেরও বেশি ব্যয় হয়েছে কেবল বিজ্ঞাপন খাতে। এই বছরের শুরুর দিকে লোকসভাতে নারী ও শিশু উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ডঃ বীরেন্দ্র কুমার গত চার বছরের এই প্রকল্প সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রকাশ করেছেন।
বীরেন্দ্র কুমারের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' প্রকল্পে বরাদ্দকৃত অর্থের ৫৬ শতাংশের বেশি অর্থ বিজ্ঞাপনের জন্য ব্যয় করা হয়েছে গণমাধ্যমগুলিতে। বাকি অর্থের মাত্র ২৫ শতাংশ এই চার বছরে দেশের বিভিন্ন জেলাগুলিতে পাঠানো হয়েছে। আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, বাকি ১৯ শতাংশ এখনও পর্যন্ত কোথাও ব্যয় করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। তথ্যে উল্লেখ রয়েছে, মোট ৬৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' প্রকল্পের খাতে। কিন্তু এর মাত্র ১৫৯ কোটি টাকা বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো হয়েছে।
দেশে লিঙ্গ অনুপাত কমানো এবং কন্যা সন্তান সম্পর্কে বাবা-মা ও সমাজের ধ্যান ধারণা বদলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে ফল ঠিক উল্টো হয়েছে। ২০১৫ সালে প্রথম দফাতে লিঙ্গ বৈষম্যে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলির মধ্যে ১০০টি জেলাতে ও দ্বিতীয় দফাতে ৬১টি জেলাতে এই প্রকল্প চালু করা হয়। বর্তমানে সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে এই ১৬১টি জেলার মধ্যে ৫৩টি জেলাতেই চাইল্ড সেক্স রেশিও ক্রমশ কমছে।
যেমন নিকোবর, এখানে ২০১৪-১৫ সালে প্রতি ১০০০ জনে লিঙ্গ অনুপাত ছিল ৯৮৫, যা ২০১৬-১৭ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৮৩৯। একই অবস্থা পুদুচেরিতে। ২০১৪-১৫ তে এখানে লিঙ্গ অনুপাত ছিল ১১০৭, ২০১৬-১৭ তে তা পৌঁছেছে ৯৭৬। আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও পুদুচেরিকে কেন্দ্র সরকার যথাক্রমে ৫৫ কোটি ও ৪৬ কোটি অর্থ সাহায্য করেছিল।
এতো কিছুর পরেও প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্প ব্যর্থ কিনা তা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরেন্দ্র কুমারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এই প্রকল্প সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে দেশের ৬৪০টি জেলাতেই এই প্রকল্প চালু করবেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন