দেশের মাত্র ১ শতাংশ মানুষ গত ১ বছরে দেশের মোট সম্পদের ৭৩ শতাংশ নিজেদের দখলে নিয়েছে। অক্সফ্যাম সার্ভে রিপোর্ট থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
যে তথ্য ভারতের অর্থনৈতিক বৈষম্যের স্পষ্ট ছবি আরও একবার সামনে এলো। প্রসঙ্গত এই বছরে ভারতের আর্থিক বাজেট ছিলো ২০.৯১ লক্ষ কোটি টাকার।
সংস্থাটি আরও জানিয়েছে দেশের পোশাক শিল্পের প্রথম সারির একজন এক্সিকিউটিভ এক বছরে যা বেতন পান, গ্রামীণ ভারতের সর্বনিম্ন মজুরি পাওয়া এক শ্রমিকের তাঁর সমমানের বেতন পেতে সময় লাগবে ৯৪১ বছর।
অক্সফ্যাম আয়োজিত এই সমীক্ষার ৭৩% উত্তরদাতা মনে করেন যে, ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে ‘তাত্ক্ষণিকভাবে’ বা ‘খুব তাড়াতাড়ি’ এই পার্থক্য দূর করা উচিৎ। অন্যদিকে উত্তরদাতাদের ১৫%-র বেশি মনে করেন যে, একজন ব্যক্তির পক্ষে কঠোর পরিশ্রম করেও তার সম্পদ বৃদ্ধি করা কঠিন।
অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিষয়ে এই সমীক্ষা বলছে যে, একই সময়কালে ভারতের শীর্ষ এক শতাংশ জনসংখ্যা গত বছর সৃষ্ট ৭৩% সম্পদ অধিকার করেছে এবং একই সাথে, ৬৭ কোটি ভারতীয় জনসংখ্যার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ১% বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই গবেষণায় আরও দাবি করা হয়েছে যে গত এক বছরে ভারতবর্ষের কোটিপতিদের অর্জিত অর্থের পরিমাণ – ৪,৮৯,১০০ কোটি টাকা – যা সব রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা বাজেটের ৮৫ শতাংশ পূরণ করতে পারে। গত এক বছরে ভারতবর্ষের কোটিপতিরা তাদের সম্পদ ১৫.৭৭ লক্ষ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২০.৬৭ লক্ষ কোটি টাকা করেছেন বলেও ওই সমীক্ষার ফলাফলে দাবি করা হয়েছে।
ওই সমীক্ষা আরও জানিয়েছে ২০০০ সালে যেখানে ভারতে বিলিওনারের সংখ্যা ছিলো মাত্র ৯, সেখানে এবছর এই সংখ্যা প্রথমবারের জন্য ১০০ অতিক্রম করে ১০১-এ পৌঁছেছে এবং এবছর এই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও ১৭ জন।
এই সমীক্ষা আরও দাবি করেছে, ২০১৭ সালে অস্বাভাবিক গতিতে বিলিওনারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের সম্পদ বেড়েছে ১৩ শতাংশ যা সাধারণ শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির হার থেকেও ৬ গুণ বেশী।
ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত ১২ মাসে এই গোষ্ঠীর সম্পদ বেড়েছে ৭২২ বিলিয়ন ডলারের বেশী, যা দিয়ে অন্তঃত সাত বার চরম দারিদ্র্য মুছে ফেলা যেতে পারে।
পরিশেষে অক্সফ্যাম-এর পক্ষ থেকে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে – এই অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করতে দেশের অর্থনীতি নির্দিষ্ট এক শ্রেণীর জন্য কাজ না করে সবার জন্য কাজ করুক।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন