গত এক বছরে দেশে হেট স্পীচ বা ঘৃণা ভাষণ বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। সদ্য প্রকাশিত ন্যাশনাল ক্রাইমস রেকর্ডস ব্যুরোর রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত NCRB রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে যেখানে হেট স্পীচ নিয়ে ৯৯৩ টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছিল, ২০২২ সালে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৪-এ। অর্থাৎ এক বছরে ৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে হেট স্পীচ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা।
২০২২ সালে হেট স্পীচ নিয়ে সবথেকে বেশি মামলা দায়ের হয়েছে উত্তরপ্রদেশে (২১৭টি)। এরপর রয়েছে যথাক্রমে রাজস্থান (১৯১ টি) এবং মহারাষ্ট্র (১৭৮টি)।
সদ্য যে পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন হল তার মধ্যে ২টি রাজ্যে হেট স্পীচের ঘটনা গত বছরের তুলনায় ১০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। মধ্যপ্রদেশে ২০২১ সালে মাত্র ৩৭ টি এমন মামলা দায়ের হয়েছিল, ২০২২ সালে সেই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ১০৮-এ। অর্থাৎ ১৯১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে মামলা। রাজস্থানে মামলা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩৮ শতাংশ। ২০২২ সালে ১৯১টি মামলা দায়ের হয়েছে মরুরাজ্যে, ২০২১ সালে যা ছিল ৮০টি।
তেলাঙ্গানায় ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে মামলা। ২০২১ সালে ৯১ টি এবং ২০২২ সালে ১১৯টি মামলা দায়ের হয়েছে। ছত্তিসগড়ে মামলার সংখ্যা কমেছে। ২০২১ সালে যেখানে ৭ টি মামলা দায়ের হয়েছিল, ২০২২ সালে সেখানে মাত্র ৫ টি মামলা দায়ের হয়েছে। এবং মিজোরামে গত দু বছরে কোনও মামলা দায়ের হয়নি।
বাকি বড় রাজ্যগুলির মধ্যে তামিলনাড়ুতে ১৪৬টি, অন্ধ্রপ্রদেশে ১০৯টি, কর্ণাটকে ৬৪টি, আসামে ৪৪টি, পশ্চিমবঙ্গে ৪৩টি, পাঞ্জাবে ৩০টি, হরিয়ানায় ২৯টি, দিল্লিতে ২৬টি, জম্মুকাশ্মীরে ১৬টি মামলা দায়ের হয়েছে।
জনসংখ্যার বিচারে হেট স্পীচ নিয়ে সবথেকে বেশি মামলা দায়ের হয়েছে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে। মণিপুরে ১৫টি মামলা দায়ের হয়েছে অর্থাৎ প্রতি লক্ষ জনসংখ্যা পিছু এই ধরণের অপরাধের পরিমাণ ০.৫। এরপর রয়েছে যথাক্রমে সিকিম (০.৪) এবং অরুণাচল (০.৩)। এই তালিকায় আবার সবচেয়ে নিচে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (০.১)।
এই রিপোর্ট প্রসঙ্গে সমাজকর্মী তথা সিপিআই নেতা সমর ভাণ্ডারী বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থান্বেষী এজেন্ডার জন্য সমাজে মেরুকরণ করছে। হেট স্পীচ বৃদ্ধির এটি একটি বড় কারণ।“
উল্লেখ্য, হেট স্পীচ নিয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। ধর্ম, জাতপাত, ভাষা এবং জন্মস্থানের ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বৈরিতাকে উসকে দেওয়াকে হেট স্পীচের আওতায় ফেলা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন