মহামারী করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিখোঁজ হয়েছে ক লক্ষ মহিলা। কিন্তু, তাঁদের মধ্যে এখনও ৫৬ শতাংশ অর্থাৎ ৫৬০০০ মহিলাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি, সংসদে এই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
বিভিন্ন রাজ্যে মহিলা নিখোঁজ, পাচার এবং তাঁদের উদ্ধারের তথ্য জানতে চেয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে প্রশ্ন উত্থাপন করেছিলেন তিন জন সাংসদ। তাঁদের সেই প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে বাংলার (পশ্চিমবঙ্গের) ভয়াবহ চিত্র।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০২০ এবং ২০২১ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় ১ লক্ষ প্রাপ্তবয়স্ক (বয়স ১৮ বছরের বেশি) মহিলা নিখোঁজ হন। এর মধ্যে ৪৪ হাজার জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে, কিন্তু ৫৫ হাজারের বেশি জনকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গত ১৩ ডিসেম্বর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান থেকে আরও জানা গেছে, ২০২০ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিখোঁজ হয়েছে মোট ৫১ হাজার ৫৯৯ জন মহিলা। তার মধ্যে ২২ হাজার ৬৯৪ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে।
ঠিক একইভাবে, ২০২১ সালে মোট ৫০ হাজার ৯৯৮ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন, তার মধ্যে মাত্র ২১ হাজার ৪৯৭ জনকে খুঁজে পাওয়া গেছে।
শুধু তাই নয়, ২০১৯ সালেও একই ঘটনা ঘটেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন ৫৪ হাজার ৩৪৮ জন মহিলা। তাঁদের মধ্যে থেকে মাত্র ২৩ হাজার ৪০৮ জনকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। বাকিদের, এখনও অবধি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রেও নিখোঁজ মহিলাদের সংখ্যা বেড়েছে। মহামারী চলাকালীন এই দুটি রাজ্যেই গড়ে এক লক্ষেরও বেশি মহিলা নিখোঁজ হয়েছিলেন। তারমধ্যে, মধ্যপ্রদেশে ৪৭ হাজার এবং মহারাষ্ট্রে ৭৭ হাজার মহিলার সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, ২০২০ সালে সারাদেশে মোট ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৯৯৩ জন মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। ২০২১ সালে নিখোঁজ মহিলার সংখ্যা ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৬৮ জন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, 'জাতীয় পরিসংখ্যান অনুসারে প্রতি বছর নিখোঁজ হওয়া মহিলাদের সংখ্যা প্রায় একই থেকেছে। তবে তাঁদের সন্ধানের ক্ষেত্র হ্রাস পেয়েছে। এটি একটি উদ্বেগের বিষয়।'
পশ্চিমবঙ্গ অনুদ্ধারকৃত মহিলার সংখ্যা ৫৬%, এটি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রাজ্য পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন অফিসার। তিনি বলেন, 'নিখোঁজ মহিলাদের সন্ধান পাওয়ার পর আর পরিবারগুলি পুলিশে রিপোর্ট করে না।'
তিনি জানান, নিখোঁজ শিশুদের ক্ষেত্রে এফআইআর দায়ের করা প্রথম রাজ্যগুলির মধ্যে একটি বাংলা এবং তাদের সনাক্ত করার জন্য একটি ফেসিয়াল রিকগনিশন সিস্টেম (FRS) ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন