করোনা উদ্ভূত সঙ্কটের কারণে ঘরোয়া অর্থনীতিতে কাজ করা ভারতের প্রায় ৪০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মুখোমুখি হতে চলেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলো জাতিসংঘের শ্রম সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন বা আইএলও। 'ILO Monitor 2nd edition: COVID-19 and the world of work' শীর্ষক প্রতিবেদনে করোনাভাইরাস মহামারীকে "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে সবচেয়ে খারাপ বিশ্বব্যাপী সংকট" হিসাবে বর্ণনা করেছে আইএলও।
মঙ্গলবার আইএলও-র ডিরেক্টর জেনারেল গুই রাইডার বলেছেন, "উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় অর্থনীতিতে শ্রমিক ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বিপর্যয়ের মুখোমুখি হচ্ছে। আমাদের দ্রুত, সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। সঠিক, জরুরি, নিয়ন্ত্রণ বেঁচে থাকা ও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে পারবে।"
আইএলও-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০০ কোটি মানুষ প্রথা বহির্ভূত কাজ করে (বেশিরভাগ উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে) এবং COVID-19 সঙ্কটের ফলে বিশেষত এরা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভারত, নাইজেরিয়া এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতে লকডাউন ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জারি থাকায় ইতিমধ্যেই এরকম লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের জীবনে এর প্রভাব পড়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, "ভারতে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ প্রথা বহির্ভূত অর্থনীতিতে কাজ করে থাকেন। বর্তমান সঙ্কটের ফলে প্রায় ৪০ কোটি মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, আরো গভীর দারিদ্র্যের সম্মুখীন হতে চলেছে তাঁরা। ভারতের এই লকডাউন যা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রকাশ করা COVID-19 Government Response Stringency Index-এর উপরের দিকে রয়েছে, শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে, এবং তাদের অধিকাংশকেই গ্রামাঞ্চলে ফিরে যেতে বাধ্য করেছে।"
রিপোর্টে বলা হয়েছে, "COVID-19 মহামারীটি বিশ্বব্যাপী ওয়ার্কিং আওয়ার এবং উপার্জনের উপর একটি বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলছে।"
আইএলও-র ডাইরেক্টর জেনারেলের কথায়, "৭৫ বছরেরও বেশি সময় পরে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা এটা। যদি একটা দেশ এই পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো। আমাদের এমন সমাধান বের করতে হবে যা বিশ্বব্যাপী সমাজের সকল বিভাগকে বিশেষত যারা সবচেয়ে বেশি দুর্বল তাদের সহায়তা করতে পারে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন