করোনা মহামারীর জেরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩৯৫ মিলিয়ন মানুষ বা ৩৯ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ডুবে যেতে পারেন। দৈনিক আয় ১.৯০ ডলার বা ১৪৪ টাকারও কম, বিশ্বজুড়ে এরকম মানুষের সংখ্যা ১ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অধীনে থাকা UNU-WIDER-এর গবেষণা পত্রে উদ্বেগজনক এই দাবি করা হয়েছে।
দারিদ্র্যের সীমা বোঝানোর জন্য বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে নির্ধারিত দারিদ্র্যের মাত্রা ব্যবহার করা হয়েছে গবেষণাতে। এক্ষেত্রে চূড়ান্ত দরিদ্র বলতে যাদের দৈনিক আয় ১.৯০ ডলার (১৪৪ টাকা) বা তারও কম তাদের বোঝানো হয়েছে এবং সে সমস্ত মানুষের দৈনিক আয় ৫.৫০ ডলার (৪১৭ টাকা) তাদের বলা হয় বেশি দরিদ্র হিসেবে ধরা হয়েছে।
লন্ডনের কিংস কলেজ ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদদের সহায়তায় তৈরি 'Precarity and the Pandemic: COVID-19 and Poverty Incidence, Intensity and Severity in Developing Countries' শীর্ষক ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে বিশ্ব অর্থনীতির যা অবস্থা, তাতে আগামী দিনে বিশ্বজুড়ে কমপক্ষে ১.১২ বিলিয়ন মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার হতে পারেন। আর বেশি দারিদ্র্যের শিকার হবেন প্রায় ৩.৭০ বিলিয়ন মানুষ।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, দারিদ্র্যসীমার মান বাড়ার সাথে সাথে বাড়তি দরিদ্রদের একটি বড় অংশ একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কেন্দ্রীভূত হবে যেখানে গড় আয়ের স্তর অনুসারে সংশ্লিষ্ট দারিদ্র্যসীমা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক। এর পরিণতি হিসেবে কোনো একটি নির্দিষ্ট এলাকায় মানুষের গড় আয় কমে যেতে পারে ২০ শতাংশ।
এই অতিরিক্ত দরিদ্রদের প্রায় ৪১ শতাংশ পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশেষ করে চীনে বসবাস করবে। এক চতুর্থাংশ থাকবে দক্ষিণ এশিয়ায়। মধ্য প্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা (MENA) এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান (LAC) -তে সম্মিলিতভাবে ১৮ শতাংশ মানুষ বাস করবে।
লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক এবং UNU-WIDER এর নন-রেসিডেন্ট রিসার্চ ফেলো অ্যান্ডি সামনার জানিয়েছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার যদি এই মানুষদের স্বার্থে অবিলম্বে কোনো সদর্থক উদ্যোগ না নেই তাহলে কোভিড-১৯ সঙ্কট এক ধাক্কায় এই মানুষগুলোকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে ফেলে দেবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন