বাবরি মসজিদ ধ্বংস নিয়ে দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামাজিক টানাপোড়েন, অস্থিরতার পর বুধবার অযোধ্যায় রামজন্মভূমির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এক অধ্যায়ের অবসান হল ২০২০ সালের ৫ অগস্ট। যেখান থেকে এই অধ্যায়ের সূত্রপাত, তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর: ২ লাখ করসেবক বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয়। দেশজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়। মৃত্যু হয় বহু মানুষের।
১৬ ডিসেম্বর: লিবারহান অযোধ্যা কমিশন তদন্ত কমিশন গঠন করে পিভি নরসিমা রাওয়ের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকার।
১৯৯৩ সালের ৩ এপ্রিল: বিতর্কিত অঞ্চলটি অধিগ্রহণের জন্য অযোধ্যা আইন পাশ হয়। ইসমাইল ফারুকি ও অন্যান্যরা এই আইনের বিরোধিতা করে পিটিশন দাখিল করেন।
১৬ নভেম্বর, ১৯৯৩, আদালত কর্তৃক নিযুক্ত রাম মন্দিরের পুজারী বাবা লাল দাসকে গুলি করে হত্যা। বাবা লাল দাস আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাম মন্দির আন্দোলনের তীব্র বিরোধী ছিলেন।
১৯৯৪ সাল: ইসমাইল ফারুকি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, মসজিদ ছাড়া যে কোনও জায়গায় নমাজ পড়া যেতে পারে।
২০০২ সাল: তিন বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলায় শুনানি শুরু করেন। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভেকে নির্দেশ দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ এলাকায় মন্দিরের অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে।
২০০৩ সাল: মহম্মদ আসলাম ওরফে ভুরের সঙ্গে ইউনিয়ন অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড আদার্স মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানায়, বিতর্কিত এলাকায় কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করা যাবে না।
২০০৯ সালের ৩০ জুন: লিবারহান কমিশন চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা করে।
২০১০ সাল: হাইকোর্ট জানায় বিতর্কিত জমিটি তিন ভাগে ভাগ করা হবে। যা হল রাম লালা বিরাজমান, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া। এরপর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যায়।
২০১১ সলের ৯ মে: হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৬ সাল: বিতর্কিত জমিতে হিন্দু মন্দির গড়তে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন সুব্রহ্মনিয়াম স্বামী।
২০১৭ সালের ২১ মার্চ: আদালতের বাইরে মামলাটি সামলে নিতে।
৩০ মে: বাবরি মসজিদ ধ্বংসে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মুরলী মনোহর জোশি, উমা ভারতী, লালকৃষ্ণ আদবানি, বিনয় কাটিয়ারের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
৮ অগস্ট: ধ্বংসস্তূপের কাছেই মসজিদ তৈরি করা যেতে পারে বলে সুপ্রিম কোর্টে জানায় উত্তরপ্রদেশের শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড।
১১ অগস্ট: ৫ ডিসেম্বর ১৩ টি আবেদনের শুনানি করবে বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট।
২০ নভেম্বর: উত্তরপ্রদেশের শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, অযোধ্যায় মন্দির ও লখনউয়ে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে।
১ ডিসেম্বর: ২০১০ সালে এলাহাবাদ কেসের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে ৩২ টি সিভিল রাইটস গ্রুপ।
৫ ডিসেম্বর: চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয় প্রাক্তন বিচারপতির বেঞ্চে।
এরপর ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর বহু প্রতীক্ষিত রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের আবেদন নাকচ করে দেয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন